ত্রিপুরার নির্বাচনের প্রাক্কালে ত্রিপুরার মাটিতে দাঁড়িয়েই কংগ্রেস এবং সিপিআইএমকে বিদ্ধ করতে দেখা গেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। কংগ্রেস- সিপিআইএম যে জোট করেছে তাকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার জানান, ‘কংগ্রেস-সিপিআই দোসর হয়েছে টিপ্রামোথা। কারণ, কংগ্রেস-সিপিএম বুঝে গিয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিততে পারবে না।‘ সঙ্গে সংযোজন,’এখানে তিনটি আপদ অর্থাৎ কংগ্রেস, কমিউনিস্ট এবং টিপ্রামোথা এক হয়েছে। তারা সবাই এক। এরা শুধুমাত্র দুর্নীতিই করতে পারে। এখানে একদিকে ‘ট্রিপল ট্রাবল’ অন্যদিকে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন।‘
এরই রেশ ধরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এও প্রশ্ন, ‘কংগ্রেস কী করে সিপিআই এম সঙ্গে জোট বেঁধেছে। এখানে কংগ্রেসের লোকদের হত্যা করেছে কমিউনিস্টরা। কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে কংগ্রেস। আর এখন তারাই একে অপরকে ‘ইলু ইলু’ করছে। তাদের লজ্জা করে না?’ একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ত্রিপুরাবাসীকে সতর্ক করে জানান, ‘কংগ্রেস এবং সিপিআইএম এখানে ‘মোহরা’ হিসাবে দাঁড় করিয়েছে টিপ্রামোথাকে। তারা এক হয়েছে এখানে দুর্নীতি করার জন্য। আমরা এখানে বিকাশের জন্য লড়াই করছি। ওরা ত্রিপুরার উন্নতি চায় না। ওরা চাইছে দুর্নীতি করে, ত্রিপুরার মানুষকে আবার বঞ্চিত করে পিছিয়ে দিতে।‘
প্রসঙ্গত, এদিন, বিজেপির ‘বিজয় সঙ্কল্প’ যাত্রার দুটি সভা করেন শাহ। দুপুর ১২টায় সভা করেন চণ্ডীপুরে। চণ্ডীপুরের সভা থেকে ত্রিপুরার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে একের পর এক তোপ দাগতে দেখা যায় অমিত শাহকে। তবে প্রধানমন্ত্রীর মতোই, শাহের মুখেও এদিন একবারের জন্যও শোনা যায়নি তৃণমূলের নাম। আক্রমণের পুরোটাই সিপিএম এবং কংগ্রেসকে। একইসঙ্গে তিনি এ দাবিও করেন, ‘ত্রিপুরার উন্নয়ন বামেরা করতে পারবেন না। ত্রিপুরার উন্নয়ন কংগ্রেসও করতে পারবে না। তিপ্রামোথা কিছুই করতে পারবে না।’
প্রসঙ্গত, শনিবারই ত্রিপুরায় জনসভা করতে এসে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের জোটকে কটাক্ষ করতে করতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও। বলেছিলেন, ‘কেরালায় কুস্তি করলেও ত্রিপুরায় ‘দোস্তি’ করেছে কংগ্রেস এবং সিপিআইএম। এদিন কার্যত সেই একই সুর প্রতিধ্বনিত হল অমিত শাহের গলাতেও। সঙ্গে ত্রিপুরা মোথাকে যুক্ত করেন শুধু।
তবে এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এও মনে করিয়ে দেন, ‘এটা ত্রিপুরার জন্য একটি নির্ণায়ক নির্বাচন। এখানে দীর্ঘদিন কংগ্রেসের শাসন ছিল। আপনারা ২৭ বছর বামেদের শাসন দেখেছেন। তারা ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য, এখানের গরিব, আদিবাসীদের জন্য কিছুই করেনি। তারা ত্রিপুরাকে শুধু ধ্বংস করেছে। এখানে উন্নয়ন হয়েছে এবং হচ্ছে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সময়েই। কমিউনিস্টরা কখনই আদিবাসীদের কল্যাণের কথা ভাবেনি। তারা এখন একজন আদিবাসীকে মুখ্যমন্ত্রী পদে মনোনয়ন দিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে। কিন্তু কংগ্রেস- কমিউনিস্ট কিছু করতে পারবে না। টিপ্রামোথা তো কোন ছাড়।’
এদিন বাম শিবিরকে বিদ্ধ করে অমিত শাহ প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘বামেরা এতদিন কী করেছে? মানিক সরকার এতদিন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, কী করেছেন? এবার ওঁর দল ওঁকেই প্রার্থীই করল না। আর এখন আদিবাসী মুখকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নাম ঘোষণা করে দিচ্ছে। চা বাগান আর রাবার শ্রমিকরা জেনে রাখুন আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর কাজ আমরাই করব।‘ এরই পাশাপাশি ভবিষ্যতে ত্রিপুরার উন্নয়নে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত করার আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জানান, ত্রিপুরার সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ করতে একটি বিমানবন্দর তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। তাছাড়া, বাড়ানো হচ্ছে সড়কের সংখ্যাও।