কলকাতার রবিনস্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া এবার হাওড়া জগাছা থানা এলাকায়। শনিবার এলাকাবাসীর নজরে আসে নিজের স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন তাঁরই স্বামী। সূত্রে খবর, হঠাৎ-ই জগাছার নন্দীপাড়া এলাকার বাসিন্দার অতিষ্ট হয়ে ওঠেন পচা দুর্গন্ধে। এই পচা গন্ধের উৎস কী তা জানতে খবর দেওয়া হয় পুরসভায়। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে হাজির হয় ওই দম্পতির বাড়িতে। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
হাওড়া পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত মহিলার নাম তপতী চক্রবর্তী। মৃত মহিলার স্বামীর নাম তুষার চক্রবর্তী। স্বাস্থ্যকর্মীরা দরজা বন্ধ দেখে দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকি করে। তবে ডাকাডাকির পরেও বাড়িতে থেকে কেউই বের হননি। দরজাও খোলেননি। ততক্ষণে খবর দেওয়া হয় জগাছা থানার পুলিশকে। জগাছা থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেয়। ঘরে ঢুকে দেখা যায় তুষার বাবু ঘরে বসে রয়েছেন। মেঝেতে পড়ে রয়েছে তার বছর সাতষট্টির স্ত্রী তপতি দেবীর পচা গলা দেহ। এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, তুষার চক্রবর্তী এবং তাঁর স্ত্রী তপতী দেবী দুজনেই অসুস্থ ছিলেন। সঙ্গে তাঁরা এও জানান, তুষার চক্রবর্তী কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে রয়েছে। বর্তমানে তিনি বিবাহিত। মুম্বইয়ে থাকেন। পুলিশের তরফে তাঁর মেয়েকে খবর দেওয়া হয়।
এদিকে তুষার চক্রবর্তীর ভাই নীহারকান্তি চক্রবর্তী জানানা, ‘আমি মাঝে মধ্যে খোঁজ খবর নিতাম। রোজ আসা সম্ভব হত না। কয়েকদিন আগেও এসেছিলাম। তবে কেউ দরজা খোলেননি। তাই চলে যাই। কিন্তু তখনও বুঝিনি এমন কিছু হবে। আমারও বয়স হয়েছে। সবসময় খোঁজ রাখা সম্ভবও হয় না। ওর মেয়েও খোঁজ রাখে না। আজ শুনি এমন ঘটনা ঘটেছে।’ এদিনের এই ঘটনায় স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘এরকম ধরণের ঘটনা তো হামেশাই শোনা যাচ্ছে এখন। তবে আমাদের এলাকাতেই এরকম ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি। আমরা প্রচণ্ড দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম গত দুদিন ধরে। আশেপাশে ঝোপঝাড়ে কোনও প্রাণী মারা গিয়েছে, সেখানটা থেকেই গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে প্রথমে ভাবা হয়েছিল। সে কারণেই আমরা পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের খবর দিই। তারপর দেখি এই কাণ্ড।’