দিল্লিতে নতুন করে আম আদমি পার্টি এবং উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনার সংঘাত সামনে এল। এদিকে পাওয়ার বোর্ড থেকে সরকার নিযুক্ত ২ মনোনীত সদস্যকে সরিয়ে দিলেন ভিকে সাক্সেনা। আর উপরাজ্যপালের এই নির্দেশ অসাংবিধানিক বলে কটাক্ষ করা হয় আম আদমি পার্টির তরফ থেকে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নতুন করে সংঘাতে জড়াল দিল্লি সরকার-উপরাজ্যপাল।
সূত্রে খবর, পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বোর্ড থেকে দুই মনোনীত সদস্যের নিয়োগ নিয়ে শুরু এই সংঘাতের। এক নির্দেশিকায় আপ মুখপাত্র এবং সাংসদের ছেলেকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেন ভিকে সাক্সেনা। এরপই উপরাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে আপ। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে দিল্লির পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বোর্ডে মনোনীত সদস্য হিসেবে আপ মুখপাত্র জেসমিন শাহকে নিয়োগ করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। সেই সঙ্গে বোর্ডের সদস্য হিসাবে নিয়োগ করা হয় আপ সাংসদ এনডি গুপ্তার ছেলে নবীন গুপ্তাকে-কে। তবে এই নিয়োগ নাকি আইন মেনে হয়নি বলেই অভিযোগ আপ বিরোধীদের তরফ থেকে। শুধু তাই নয়, মনোনীত সদস্য হিসেবে নিয়োগের জন্য দুই আপ সদস্য আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে। আর এই অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হচ্ছে বলেও দাবি। এ নিয়ে দিল্লির মুখ্যসচিবকে জরুরি তলব করেন উপরাজ্যপাল সাক্সেনা। তারপরেই উপরাজ্যপালের অফিস থেকে দুই সদস্যকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এদিকে আপের বিরুদ্ধে আনান এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে উপরাজ্যপালের নির্দেশিকার কড়া সমালোচনা করে আম আদমি পার্টি। ওই নির্দেশিকা বেআইনি এবং অসাংবিধানিক বলে দলের তরফে দাবি করা হয়েছে। পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বোর্ড মনোনীত সদস্য নিয়োগের অধিকার একমাত্র দিল্লির রাজ্য সরকারের আছে বলে জানিয়েছে তারা। এ ব্যাপারে দিল্লির উপরাজ্যপাল নিজের ক্ষমতার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা লংঘন করছেন বলেও দাবি করা হয় আম আদমি পার্টির তরফ থেকে।
প্রসঙ্গত, গত বছর নভেম্বর মাসে আপ মুখপাত্র জেসমিন শাহের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পাবলিক অফিস ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় ডায়ালগ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিশন অফ দিল্লির ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে আপ মুখপাত্রকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উপরাজ্যপালের নির্দেশে সিল করে দেওয়া হয়েছিল জেসমিনের অফিস। আর দিল্লির আপ আদমির সরকার এবং উপরাজ্যপালের সংঘাত এই প্রথম নয়। আপ সরকারের কাজে উপরাজ্যপাল নাক গলাচ্ছেন, এই অভিযোগকে ঘিরে সংঘাতের সূচনা। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। শীর্ষ আদালত এই মামলার উপরাজ্যপালের ক্ষমতা বেধেও দেয়। কিন্তু সংঘাতের চরম আকার নেয় গত বছর আবগারি নীতি নিয়ে উপরাজ্যপাল সিবিআই এবং ইডিকে দিয়ে তদন্ত সুপারিশ করার পর। সম্প্রতি দিল্লির শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিয়েও উপরাজ্যপাল এবং কেজরিওয়াল সরকারের মধ্যে সংঘাত দেখা দিয়েছিল।