বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে উত্তাল রাজ্য। ১০ দিনে ধরে শহিদ মিনার চত্বরে অবস্থানে বসেছেন সরকারি কর্মচারিরা। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে প্রতীকি অনশন কর্মসূচিও চালাচ্ছেন তাঁরা। এই প্রতীকি অনশন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন সরকারি কর্মচারি এবং পেনশনারদের মোট ৩৩টি সংগঠনের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। আর এই মঞ্চ থেকেই রাজ্য সরকারকে তাঁরা হুশিয়ারির বার্তা দিয়ে চলেছেন, অবিলম্বে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা না মেটানো হলে এই আন্দোলন আরও চরম আকার নেবে। পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে তরফ থেকে এও জানানো হয়, ‘আমাদের ন্যয্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। আমাদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতেই হবে। আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চাই না। কিন্তু, যদি রাজ্য সরকার আমাদের ডিএ না মেটায় তবে এই আন্দোলন আরও বৃহত্তর হবে।’
এই প্রসঙ্গে এই সরকারি কর্মচারীদের যৌথ সংগঠনের তরফ থেকে রবিবার এ প্রশ্নও তোলা হয়, আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের কাজে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। তাহলে তাঁদের মৌলিক অধিকার মেটাতে এত টালবাহানা কেন তা নিয়ে। এরই রেশ ধরে অপর এক আন্দোলনরত কর্মচারি তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান, ‘এটা আমাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াই। সরকার যদি তার আত্মমর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে চায়, তবে আমাদের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতেই হবে। অন্য রাজ্যের সরকারি কর্মীরা যেখানে বর্তমানে ৩৮ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পান। আমরা সেখানে মাত্র ৩ শতাংশ। আসলে সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব। জনগণের ট্যাক্সের টাকা খরচ করে সরকার এই নিয়ে শীর্ষ আদালতে গিয়েছে। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীও জানেন, এই মামলায় জয় হবে না। এ জিনিস মেনে নেওয়া যায় না।’
অর্থাৎ এই সরকারি কর্মীদের এই যৌথ মঞ্চ থেকে যে বার্তা দেওযা হচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, লড়াই থেকে পিছিয়ে আসতে নারাজ তাঁরা। বরং বিক্ষোভের পথকেই তাঁরা সঠিক পথ বলে মনে করছেন দাবি আদায়ের জন্য। এদিকে গত বছর ডিএ মামলা থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। এরপর বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং হৃষীকেশ রায়ে ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তাও পিছিয়ে গিয়েছে। এদিকে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর, মে মাসে শীর্ষ আদালতে এই মামলার চূড়ান্ত শুনানি হতে পারে। আগামী ১৫ মার্চ এই মামলার শুনানি রয়েছে। লাগাতার কর্মবিরতির পথে হাঁটতে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীরা।