বন্ধুর স্ত্রীর প্রেমে পাগল। তাই বাধা পেয়ে পরিকল্পনা করেই পথের কাঁটা সরাতে বিনোদ দলুইকে খুন করে গৌতম মাঝি। ইন্দাসের কুশমুড়ি গ্রামের বাসিন্দা গৌতম মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করে মাছ ব্যবসায়ী খুনের কিনারা করল পুলিশ। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে খুনের ঘটনার পর্দাফাঁস করে। পাশাপাশি খুনে অভিযুক্ত গৌতম মাঝিকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তুলে নিজেদের হেপাজতে নিল পুলিশ। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে বাঁকুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গণেশ বিশ্বাস জানান, গত ১৮ জানুয়ারি রাতে পাত্রসায়ের থানার হাটকৃষ্ণনগরের বাসিন্দা পেশায় মাছ ব্যবসায়ী বিনোদ দলুই (৩৮) খুন হন। পরের দিন স্থানীয় কেয়াদিঘী মাঠে বিনোদের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিনোদকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে, মৃতের স্ত্রীর এমনই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পাত্রসায়ের থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে গৌতম মাঝি নামে ওই ব্যক্তির নিয়মিত বিনোদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। মাঝে মাঝে রাতেও সে ওই বাড়িতে থেকে যেত। আর তাতেই বিনোদের স্ত্রীর সঙ্গে গৌতমের বিবাহবহির্ভূত একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁদের মেলামেশা ও আচার আচরণে বিনোদ সেটা বুঝতে পেরে গৌতমকে তাঁর বাড়িতে আসতে নিষেধ করে স্ত্রীকেও আর যোগাযোগ রাখতে দেয়নি। কিন্তু বিনোদের স্ত্রীর প্রেমে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল গৌতম। প্রেমে বাধা পেয়ে গৌতম পথের কাঁটা দূর করার জন্য বিনোদকে খুন করার পরিকল্পনা করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন দুপুরে গৌতম বিনোদকে ফোন করে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। বিনোদ সেই ফাঁদে পা দেয়। গৌতম তাঁকে সন্ধ্যায় পাত্রসায়রের হাটকৃষ্ণনগর বাজারে আসতে বলে। সেইদিন সন্ধ্যায় বিনোদ বাজারে দেখা করতে গেলে গৌতম গোপনীয়তা রক্ষা করে কথা বলার জন্য বিনোদকে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। কথাবার্তা বলতে বলতে আচমকা গৌতম বিনোদকে একটি লোহার রড দিয়ে আক্রমণ করে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বিনোদের গলায় থাকা মাফলার দিয়ে শ্বাসরোধ করে পালিয়ে যায়। পুলিশের জেরায় অভিযুক্ত গৌতম মাঝি সমস্ত ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। এরপরেই পুলিশ গৌতমকে গ্রেপ্তার করে। গৌতমকে শনিবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে হেফাজতে নিয়ে ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।’