রবিবার ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপরে হামলা চলার পরই আটক করা হয় পুলিশের এএসআই গোপালকৃষ্ণ দাসকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনও অবধি হামলার কারণ জানা যায়নি। এদিকে, অভিযুক্ত পুলিশকর্মী সম্পর্কে তথ্য জানতে গিয়েই জানা গেল, ওই পুলিশকর্মী দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন, এমনটাই দাবি তারঁ স্ত্রী জয়ন্তী দাসের। খুনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্ত্রী জয়ন্তী জানান, গত সাত-আট বছর ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তাঁর স্বামী। এর জন্য নিয়মিত ওষুধও খেতেন তিনি। স্ত্রীর দাবি, বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন এএসআই গোপাল দাস। এমনকী রবিবার মন্ত্রীকে গুলি করার আগে মেয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথাও বলেন তিনি। তবে নিহত মন্ত্রী নব কিশোর দাসের সঙ্গে অভিযুক্তের কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না, এমনটাই দাবি গোপাল দাসের স্ত্রী জয়ন্তীর।
এদিকে গোপালকৃষ্ণ দাসের চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর বাইপোলার ডিজর্ডার রয়েছে। পাশাপাশি ওই সাইকিয়াট্রিস্ট এও জানান, ৮ থেকে ১০ বছর আগে গোপালকৃষ্ণ দাস প্রথমবার তাঁর ক্লিনিকে এসেছিলেন। তিনি কথায় কথায় রেগে যেতেন। চিকিৎসা শুরুর পরই ধরা পড়ে গোপাল দাসের বাইপোলার ডিজর্ডার রয়েছে। রোগ নিয়ন্ত্রণে তাঁকে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।একইসঙ্গে এ পরামর্শও দেওযা হয়, যদি নিয়মিত ওষুধ না খান, তবে এই রোগ পুনরায় ফিরে আসতে পারে। এরই পাশাপাশি ওই সাইকিয়াট্রিস্ট এও জানান, বাইপোলার ডিসঅর্ডার হল একটি মানসিক সমস্যা যেখানে চূড়ান্ত মুড সুইং হয়। হাইপার ম্যানিয়া থেকে ডিপ্রেশন বা অবসাদ, সবকিছুই হতে পারে। এবং গোটা বিষয়টিই কয়েক সেকেন্ড বা মিনিটের মধ্যে হয়, অর্থাৎ যাকে আপনি হাসিখুশি দেখছেন, তার এক মিনিটের মধ্যেই মুডের পরিবর্তন হতে পারে। চূড়ান্ত রাগারাগি বা কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।
এদিকে এই তথ্য সামনে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে ওই পুলিশকর্মীকে রিভলভার ইস্যু করা হল তা নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে কী কারণে তাঁকে বজরঙ্গ নগরের পুলিশ পোস্টে ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তা নিয়েও। এদিকে ওড়িশা রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, ওই পুলিশকর্মী গঞ্জম জেলার জলেশ্বরখান্ডি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বেরহামপুরে পুলিশ কন্সটেবল হিসাবে কাজ শুরু করেন। ১২ বছর আগে ঝাড়সুগুদা জেলায় ট্রান্সফার করা হয় তাঁকে।