এবার রাজ্যে আয়ুষ মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় দল। দু’দিনের এই ঝটিকা সফর শুরু হচ্ছে সোমবার।এরপর মঙ্গলবার ওই পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শন শেষে দিল্লিতে গিয়ে রিপোর্ট দেবে। ৪৮ ঘণ্টার এই সফরে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও রাজ্যে আয়ুষের ডিজি-র সঙ্গেও বৈঠক করবে দলটি। সেই সঙ্গে কোনও জেলাতেও ‘সারপ্রাইজ় ভিজিট’ হতে পারে বলে আয়ুষ মন্ত্রক সূত্রের খবর। কারণ, বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর তাদের চাই। কেন্দ্রের তরফে বরাদ্দ বেড়েছে, কিন্তু তার সঙ্গে সমানুপাতে হাসপাতাল ও কলেজের পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন হয়েছে কি না বা শহর হোক বা গ্রাম, মানুষ কি চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকমতো পাচ্ছেন কিনা বা সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে কোনও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া গেছে কি না এ সবের খতিয়ান নেবেন তাঁরা। আবাস যোজনা থেকে স্কুলে মিড-ডে মিল ইস্যুতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় নজরদারি দলের পরিদর্শন নিয়ে যখন রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে ঠিক এমনই এক প্রেক্ষিতে আয়ুষ মন্ত্রকের তরফে হঠাৎ কেন্দ্রীয় দল পাঠানো যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন এ রাজ্যের আয়ুষ চিকিৎসকরা। আয়ুষ মন্ত্রক সূত্রের খবর, পাঁচ জনের ওই দলে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রকের ডিরেক্টর বিক্রম সিং, জয়েন্ট ডিরেক্টর রাহুল শর্মা-সহ পাঁচ পদস্থ কর্তা।
এদিকে সূত্রে খবর, পরিকাঠামো থেকে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে এই রাজ্যের আয়ুষ অর্থাৎ আয়ুর্বেদ, ইউনানি, যোগা, হোমিয়োপ্যাথ, সিদ্ধা-র চিকিৎসকদের একাংশ অসন্তুষ্ট।তাঁদের একাংশের অভিযোগ, কোভিডের সময় আয়ুষের চিকিৎসায় মানুষ উপকার পেয়েছেন।প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্র আয়ুর্বেদ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎসাহও বাড়ছে।কিন্তু এই রাজ্যে আয়ুষ নিয়ে ততটা প্রচার নেই।অথচ তার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্যের আয়ুষ দপ্তরের এক কর্তা।তাঁর বক্তব্য, ‘বরাদ্দ অনুযায়ীই পরিকাঠামোর উন্নতি করা হচ্ছে। সরকারি স্তরে আয়ুষ চিকিৎসা পরিষেবাও অতীতের তুলনায় ভালো হয়েছে।’
এদিকে আয়ুষ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই রাজ্যে আয়ুষের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ১৪ কোটি টাকা। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় আয়ুষ মিশনের তরফে সেই বরাদ্দ বৃদ্ধি করে প্রায় ৭ গুণ করা হয়। কেন্দ্র ও রাজ্যের ষাট এবং চল্লিশ অনুপাতে ওই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।অর্থাৎ, এই খাতে ৬০ শতাংশ টাকা দেবে কেন্দ্র আর ৪০ শতাংশ দেবে রাজ্য। এর মধ্যে ৯৮ কোটি টাকা কেন্দ্রের তরফে পাঠানো হয়। রাজ্যের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে ৪২ কোটি টাকা। যদিও খরচ না-হওয়ার কারণে কেন্দ্রের ভাগের ৯ কোটি টাকা ফেরৎ যায় ২০২০ সালে, এমনটাই খবর প্রশাসন সূত্রে। এর পর আর খুব বেশি টাকা এই খাতে বরাদ্দ হয়নি। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় আয়ুষ বিভাগের বোঝাপড়া রেখে যাতে উন্নয়ন করা যায়, সেই বিষয়ে কেন্দ্রের পাঁচ সদস্যের দলটির সঙ্গে স্বাস্থ্যসচিবের আলোচনা হতে পারে। এদিকে এই প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, ‘কেন্দ্রীয় সরকার বার বার টিম পাঠাচ্ছে, পাঠাক। মাঝেমধ্যেই আসে। তাতে কী হয়েছে?’