শনিবার অনুশীলনের সময় ভেঙে পড়ল ভারতীয় বায়ুসেনার ২ বিমান

ভয়াবহ দুর্ঘটনা মধ্য়প্রদেশের মেরেনাতে। শনিবার সকালে অনুশীলনের সময়  ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার  দু’টি বিমান। যার মধ্যে রয়েছে একটি সুখোই-৩০ এবং মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক  সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এই দু’টি ফাইটার জেটই বায়ুসেনার গোয়ালিয়ার ঘাঁটি থেকে মহড়ার জন্য উড়েছিল। এর মধ্যে সুখোই-৩০ জেটে ছিলেন দু’জন পাইলট। অন্যদিকে একজন পাইলট ছিলেন মিরাজ-২০০০এ। দুর্ঘটনার পর দু’জন পাইলটকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় তাঁরা ফাইটার জেট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। অপর পাইলটের খোঁজ চালানোর পর তাঁর দগ্ধ দেহও উদ্ধার হয়। বাকি দুই পাইলটকে উদ্ধার করা হয় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে। তাঁদের দ্রুত ভর্তি করা হয় মধ্যপ্রদেশের পুলিশ হাসপাতালে। দুর্ঘটনার সময় তাঁরা যুদ্ধবিমান থেকে বেরিয়ে যেতে পেরেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় বায়ুসেনার কপ্টার। তবে এই ঘটনার পিছনে কোনও অন্তর্ঘাত রয়েছে নাকি শুধুই দুর্ঘটনা সে ব্যাপারে তদন্তের  নির্দেশ দেওয়া হয় বায়ুসেনার তরফ থেকে।

এদিকে সূত্রে খবর, সূত্রের খবর, শনিবার অনুশীলনের সময় সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মাঝ আকাশে সুখোই-৩০ ও মিরাজ ২০০০ ফাইটার জেটের মধ্যে ধাক্কা লাগে। মাঝ আকাশে ধাক্কা লাগার পর দু’টি জেটেই আগুন ধরে যায়। মাঝ আকাশে ধাক্কা লাগার পর প্রায় ১১৩ কিলোমিটার দূরে ছিটকে পড়ে দু’টি ফাইটার জেট। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে একটি বিমান মধ্য়প্রদেশের  মেরেনাতে  ভেঙে পড়ে। অপর জেটটি ছিটকে পড়ে রাজস্থানের ভরতপুরে। সুখোই-৩০ এবং মিরাজ ২০০০ ফাইটার জেট দু’টি ১১৩ কিলোমিটার দূরত্ব ছিটকে পড়ার পর বীভৎস আগুন ধরে যায়। ইতিমধ্যেই সেই মুহূর্তের একাধিক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। নেটপাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলার একটি ভিডিয়ো। যেখানে বিমানের ধ্বংসস্তূপ পড়ে থাকতে দেখা যায়। জলন্ত অবস্থায় দেখা যায় ফাইটার জেটের একাধিক টুকরো।

এদিন দুর্ঘটনার পর মেরেনার জেলাশাসক অঙ্কিত আস্থানা জানান, ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বায়ুসেনার ওই দু’টি বিমান ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়া বিমানে আগুন ধরে যায়। উদ্ধার হওয়া দুই পাইলটের সামান্য আঘাত লেগেছে। তবে তাঁরা সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। দু’জনকেই উদ্ধারের পর স্থানীয় পুলিশ তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। দুর্ঘটনার খবর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে জানান বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরী। এদিকে সূত্রে খবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকেও ঘটনার উপর নজর রাখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার তৈরি সুখোই-৩০-এর সবচেয়ে বড় ফ্লিট রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে। অন্যদিকে ফরাসি সংস্থা দঁসা অ্যাভিয়েশনের তৈরি মিরাজ-২০০০ ও দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহার করে আসছে ভারতীয় বায়ুসেনা। ২০১৯-এ পাক অধিকৃত কাশ্মীর বা পিওকে-র বালাকোটের জঙ্গি আস্তানায় এয়ার স্ট্রাইকের সময় এই মিরাজ-২০০০ ব্যবহার করা হয়েছিল বায়ুসেনার তরফ থেকে। এর আগে একাধিক বার রাশিয়ার তৈরি  মিগ ফাইটার জেট ভেঙে পড়লেও সুখোই এর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেনি। এমন ঘটনা ঘটেনি মিরাজ এর ক্ষেত্রেও। আর এই ঘটনায় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, মাঝ আকাশে সংঘর্ষ ছাড়া এভাবে দুর্ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − five =