প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় বিমান সেবিকা দেবপ্রিয়া বিশ্বাসের মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল অনেকই। তার উত্তর না মেলায় এই মৃত্যু ঘিরে দানা বাঁধছিল রহস্যও। মূলত যে প্রশ্নটি সামনে আসছিল তা হল, আদৌ তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন না কি চারতলা থেকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেওযা হয়েছিল তাঁকে, তা নিয়েই। এর পাশাপাশি তাঁর সোশাল মিডিয়া পোস্টেও একাধিক বিষয় সামনে আসছিল। কেন তিনি এয়ারলাইন্সের চাকরি খুইয়েছিলেন, তা নিয়েও বিস্তর প্রশ্ন ওঠে। এদিকে প্রগতি ময়দান থানা সূত্রে খবর, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে দেবপ্রিয়ার। তবে রিপোর্টে কোনওরকম সন্দেহজনক কিছু মেলেনি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। দেহের বাইরে থেকে আঘাত করার কোনও চিহ্নও মেলেনি বলেই জানা যাচ্ছে এই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। অর্থাৎ চারতলা থেকে সজোরে রাস্তায় পড়েই গুরুতর রক্তক্ষরণ হয় দেবপ্রিয়ার। আর তার জেরেই মৃত্যু ঘটে তাঁর। এমন রিপোর্ট সামনে আসার পর বিমান সেবিকাকে খুনের চেষ্টায় আঘাতের বিষয়টি কার্যত উড়িয়েই দেন তদন্তকারীরা।এদিকে আবার তাঁর বাড়ি থেকে কোনওরকম সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি।ফলে তিনি আত্মঘাতী হননি বলেই ধারনা প্রগতি ময়দান থানার তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের। এখনও পর্যন্ত তদন্তে যা ধরা পড়ছে তাতে পুলিশের অনুমান, দুর্ঘটনাবশতই চারতলা থেকে পড়ে গিয়েছেন দেবপ্রিয়া। যদিও এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ।
২৭ বছরের দেবপ্রিয়া বিশ্বাসের সোশাল মিডিয়া প্রোফাইলে দেখা গিয়েছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বরের পর কলকাতা ফিরেছিল সে। ‘প্রিয়তমা’ বিমানকে সাময়িক বিদায়ের কথাও উল্লেখ রয়েছে সেখানে। তবে কথা দিয়েছিলেন, আবার ফিরে আসবেন বিমানে। কিন্তু, আর টেক-অফ করা হল না। এই ঘটনার পর থেকেই কাজ না পাওয়ার মানসিক চাপে ছিলেন দেবপ্রিয়া। ফলে মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।এদিকে আবার তাঁর ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোটও মেলেনি। বিমান সেবিকার শেষ পোস্ট মৃত্যুর ঠিক এক মাস আগে। সেখানে জিমে শরীর চর্চা করার ছবিও মিলছে। জোরকদমে চলছিল কসরত।তবে কি ঘাম ঝরিয়ে, বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফের একবার ফ্লাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি, এ প্রশ্নও উঠছে। নাকি হঠাৎ করে ‘ওয়েট পুট অন’ করার জেরে বিমান সেবিকার কাজ না পাওয়া অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর সামনে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজতেই তদন্ত চালাচ্ছে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ।এ ব্যাপারে দেবপ্রিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা।পাশাপাশি এও দেখা হচ্ছে, কোনও ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না তাও।