দিঘা যাওয়ার পথে গাড়িতে ধাক্কা লরির, আটকাতে গিয়ে চাকায় পিষ্ট চিকিৎসক

গাড়িতে ধাক্কা মেরেছিল বেপরোয়া লরি। সেই লরিকে আটকাতে গেলে তার চাকাতেই পিষ্ট হলেন এক চিকিৎসক। দিঘা বেড়াতে যাওয়ার পথে এমনই এক নৃশংস ঘটনার শিকার গৌতম মুখোপাধ্য়ায় নামে এক চিকিৎসক। ঘটনাটি ঘটেছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে। জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে খড়্গপুর থেকে গাড়িতে করে দিঘায় যাচ্ছিলেন ওই চিকিৎসক সহ পাঁচ জন। অভিযোগ, নারায়ণগড় থানার উকুনমারির কাছে একটি লরি ওভারটেক করতে গিয়ে গাড়িটির সামনের অংশে ধাক্কা মারে। এর পরে লরিটিকে আটকান গৌতমবাবু সহ গাড়ির যাত্রীরা। তা সত্ত্বেও লরির চালক এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখনই লরির সামনে পথ আটকে দাঁড়ান ওই চিকিৎসক। অভিযোগ, তখনই ওই চিকিৎসক ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে তাঁর উপর দিয়ে লরি চালিয়ে দেন চালক। ঘটনাস্থলেই মৃত্য়ু হয় ৪৫ বছর বয়সী গৌতমবাবুর। ঘটনায় আহত হন আরও দু’ জন। এরপরই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ঘাতক লরিটি। চেষ্টা করেও লরিটিকে ধরতে পারেনি পুলিশ। আহত দু’ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য় মকরামপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘাতক লরি এবং সেটির চালকের খোঁজ করছে নারায়ণগড় থানার পুলিশ। এদিকে ময়নাতদন্তের জন্য মৃত চিকিৎসকের দেহ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে এদিন এই ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন মৃত চিকিৎসকের স্ত্রী সঙ্গীতা মুখোপাধ্যায়ও। মেদিনীপুর হাসপাতালে দাঁড়িয়ে তিনি জানান, এই ঘটনার পর মৃত স্বামীর দেহ আগলে দীর্ঘক্ষণ রাস্তা তাঁকে বসে থাকতে হয়। অসংখ্য স্থানীয় মানুষ সেখানে জড়ো হলেও কেউ তাঁকে কোনও সাহায্য করেননি বলেও অভিযোগ জানান তিনি।  এমনকী পুলিশকে ফোন করার পরও মেলেনি কোনও সাহায্য। এই ঘটনা বিবরণ দিতে গিয়ে সঙ্গীতা দেবী জানান, ‘আমরা খড়গপুর থেকে দিঘার দিকে যাচ্ছিলাম। তখনই ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তবে সময় মতো ব্রেক চেপে দেওয়ার জন্য আমরা কোনও রকমে বেঁচে গিয়েছিলাম। ট্রাক ড্রাইভারের সঙ্গে তর্কাতর্কি হওয়ার সময় সে লরিতে উঠে পড়ে স্টার্ট দেয়। গৌতমবাবু লরিটি থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, তখন তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায় ট্রাকটি। তখনও উনি প্রাণে বেঁচেছিলেন। প্রচুর রক্তপাত হয়েছিল। এক ব্যক্তি একটি গাড়ি ঠিক করে আমাদের এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সকাল ৭টা নাগাদ এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।’ এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় মৃত গৌতম মুখোপাধ্যায় বেলপাহাড়িতে ডাক্তারি করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + eighteen =