একেনবাবু’ উপন্যাসের লেখক সুজন দাশগুপ্তের অস্বাভাবিক মৃত্যু। বুধবার ইএম বাইপাসের ধারে বহুতল আবাসন থেকে উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ। ফ্ল্যাটে তিনি একাই ছিলেন বলে পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে খবর। পাশাপাশি এও খবর, বুধবার সকালে কলকাতার ইএম বাইপাসের ধারে ‘উদিতা অ্যাপার্টমেন্ট’ সুজনবাবুর বাড়ির গৃহ সহায়িকা অন্যান্য দিনের মতোই এদিনও কাজে আসেন। এরপর তিনি দেখেন, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বেশ খানিকক্ষণ ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পাননি তিনি। এর পর নিরাপত্তারক্ষীদের ডেকে আনেন তিনি। কিন্তু তাঁরাও ডেকে, দরজা ধাক্কা দিয়ে সাড়া পাননি ভিতর থেকে।এর পর সুজনবাবুর এক অত্মীয়কে খবর পাঠানো হয়। তার পর খবর দেওয়া হয় সার্ভে পার্ক থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢোকেন। তাতে দেখা যায়, শয়নকক্ষে, অ্যাটাচড টয়লেটের সামনে পড়ে রয়েছে তাঁর নিথর দেহ। বাড়িতে সুজনবাবু একাই ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সুজনবাবুর স্ত্রী শান্তিনিকেতনে রয়েছেন। মেয়ে রয়েছেন বিদেশে। তিনিও লেখিকা। তাঁদেরকেও দেওয়া হয় এই খবর। পুলিশ আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছে। তবে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সুজনবাবুর মৃত্যুতে এখনও পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়েছিল সুজনবাবুর দেহ। মুখের কাছে রক্ত পাওয়া গিয়েছে। তাতে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে।আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। সুজনবাবুর দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। তার রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে সুজন দাশগুপ্তর পরিবার সূত্রে খবর, তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। কী কারণে মৃত্যু হল তাঁর, সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় চরিত্রে ‘একেনবাবু’র স্রষ্টা সুজনবাবু। গল্পে চরিত্রের পুরো নাম একেন্দ্র সেন। আর পাঁচটা গোয়েন্দা চরিত্রের মতো গুরু-গম্ভীর নয়, বরং দিলখোলা মানুষ হিসেবেই ‘একেনবাবু’কে গড়ে তুলেছিলেন সুজনবাবু। পাঠকমহলে তাঁর হাতে গড়ে ওঠা এই চরিত্র বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। সুজনবাবুর গল্প অবলম্বনে তৈরি হয় ছায়াছবিও।