প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে বড় সাফল্য নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের। সূত্রে খবর, এদিন উপত্যকায় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে খতম হয় দুই লস্কর জঙ্গি।মঙ্গলবার সকালে বদগামে আদালত চত্বরের সামনে জঙ্গিদের সঙ্গে শুরু হয় এই গুলির লড়াই। দুই সন্ত্রাসবাদীকে ঘিরে ফেলেন নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সিনিয়র সপারিনটেনড্যান্ট অফ পুলিশের অফিস। এদিকে এই এলাকা জনবহুল হওয়ায় বিপদের সম্ভাবনা ছিল। নিরাপত্তা বাহিনীকে দেখে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। সঙ্গে সঙ্গে পালটা জবাব দেয় বাহিনী।
এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এই এনকাউন্টার। শেষে দুই জঙ্গিকেই নিকেশ করে নিরাপত্তা বাহিনী। উল্লেখ্য, গত রবিবারও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াই হয়েছিল। তবে সেদিন গুলি ছুড়তে ছুড়তে গা ডাকা দেয় তিন জঙ্গি। সেই ঘটনার দু’দিনের মাথাতেই এনকাউন্টারে দুই জঙ্গিকে নিকেশ করল বাহিনী। ওই দিন যে তিনজন পালিয়ে গিয়েছিল, এদিন তাদেরই খতম করা হয়েছে কিনা, তা অবশ্য সেনার তরফে স্পষ্ট করা হয়নি। তবে এটুকু জানানো হয়েছে, এদিন এনকাউন্টারের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় টার্গেট কিলিং চালাচ্ছে জঙ্গিরা। এই অবস্থায় পালটা কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করে ভারতীয় সেনা। বছরের শুরুতেই পরপর এনকাউন্টারে একের পর জঙ্গি নেতাকে নিকেশ করা গিয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর। এদিকে চলতি বছরের শুরুতেই রাজৌরির ডাংরি গ্রামে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালায় জঙ্গিরা। বাড়িতে ঢুকে নাম জিজ্ঞেস করে চার হিন্দু গ্রামবাসীকে ঝাঁঝরা করে দেয় তাঁরা। ওই ঘটনায় নিহত হন প্রীতম শর্মা, তার ছেলে আশিস কুমার দীপক কুমার এবং শীতল কুমার। শুরু হয় জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি। শুধু খুনই নয়, ওই সময় গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আইইডি ফেলে রেখে চলে যায় জঙ্গিরা। সেই আইইডি বিস্ফোরণে প্রাণ যায় এক শিশুর। ঘটনার তিন-চার দিন পর জঙ্গিদের খুঁজে বের করে তাদের খতম করে সেনা।
এরপরই জম্মু-কাশ্মীরেজঙ্গি দমনে নয়া উদ্যোগ নেয় কেন্দ্র। টার্গেট কিলিং রুখতে মহিলা গ্রামবাসীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়াও শুরু করে সরকার। সম্প্রতি রাজৌরির সুন্দরবনি সেক্টরে প্রায় ৫০ জন মহিলাকে রাইফেল চালানো শেখানো হয়। আধা সেনার অর্থাৎ সিআর পিএফের উদ্যোগে এই বিশেষ ক্যাম্প করা হয়েছিল। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে মূলত থ্রি নট থ্রি, ও এসএলআর চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় গ্রামের মহিলাদের।
এই প্রসঙ্গে সিআরপিএফের তরফ থেকে জানানো হয়, এই প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন ভূস্বর্গের প্রায় ৫০ জন মহিলা গ্রামবাসী। এদের প্রত্যেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর সংলগ্ন নিয়ন্ত্রণ রেখা অর্থাৎ লাইন এফ কন্ট্রোল সংলগ্ন গ্রামগুলির বাসিন্দা। ১৮ থেকে ৩০ বয়সী মহিলাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে জঙ্গিদের থেকে গ্রামকে রক্ষা করতে এই ধরনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলাদের কাজে লাগানো হবে বলেও জানানো হয়েছে সিআরপিএফ-এর তরফ থেকে।