প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে কপালে গভীর ভাঁজ দিল্লি পুলিশের।কারণ সূত্রে খবর, চার সন্দেহভাজন জঙ্গি নাশকতার উদ্দেশে দিল্লিতে গা ঢাকা দিয়েছে। এরপরই সন্দেভাজনদের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। গত বৃহস্পতিবারই দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকা থেকে থেকে ২ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ দল। দিল্লি পুলিশের সন্দেহ, সন্দেহভাজন চার জঙ্গি নাশকতা চালানোর জন্য ড্রপ-ডেড পদ্ধতির মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র পেয়েছে। একটি সোসাল মিডিয়া অ্যাপের মাধ্যমে সীমান্তের ওপারে তাদের হ্যান্ডলারদের সাথে যোগযোগ রেখে চলেছে বলে আশঙ্কা দিল্লি পুলিশ কর্তাদের। এদিকে এ খবরও মিলছে, উত্তরাখণ্ডে একটি অজ্ঞাত স্থানে নাশকতার জন্য এই অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এই খবর সামনে আসতেই দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী দল পুরো ব্যাপারটা খতিয়ে দেখছে বলে দিলিল পুলিশ সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, জানুয়ারি মাসের শুরুতেই দিল্লি থেকে সন্দেহভাজন ২ জঙ্গি নৌশাদ এবং জগজিৎ সিং-কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরা নাশকতার উদ্দেশে রাজধানীর জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের খুনের জন্যই তারা দিল্লিতে এই ঘাঁটি গেড়েছিল বলে পুলিশ এও জানতে পেরেছে। তাদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ডেরা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজও উদ্ধার হয়। এরপর গত শুক্রবার ধৃতদের পাতিয়ালা হাওউস কোর্টে তাদের তোলা হলে জেরার জন্য ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এরপরই দিল্লি পুলিশের দাবি, ধৃত নৌশাদ এবং জগজিতের হিট লিস্টে ছিলেন পঞ্জাব ও দিল্লির ৩ দক্ষিণপন্থী নেতা। গ্রেপ্তারের আগে হিট লিস্টে নাম থাকা নেতাদের গতিবিধিও তারা রেকর্ড করে রেখেছিল। নাশকতা চালানোর জন্য হাওলা মারফৎ ধৃতদের কাছে অর্থ এসেছিল বলেও দাবি করেছে পুলিশ। দু’জনে টোকেন মানি হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা পেয়েছে বলেও স্বীকার করেছে ধৃতরা।
এদিকে, গত শনিবার দিল্লির ভালসওয়া ডেইরি এলাকার ধৃত জঙ্গিদের ভাড়া নেওয়া বাড়ি থেকে একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির কাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । গত ১৪ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ধৃতরা ওই ব্যক্তিকে খুন করেছে বলে পুলিশের অনুমান। উদ্ধার হওয়া দেহের টুকরোগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এর পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ সূত্রে এও জানা গেছে, ধৃত নৌশাদকে ১৯৯১-৯২ সালে দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী থেকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিহার জেলে বন্দি ছিল সে। জেলে থাকাকালীন ২০০০ সালে লালকেল্লায় হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত লস্কর জঙ্গি মহম্মদ আরিফের সঙ্গে পরিচয় হয় নৌশাদের। এরপর ২০১১ সালে পাকিস্তান ভিত্তিক হ্যান্ডলার সোহলের সঙ্গে দেখা করে। জেলবন্দি থাকার সময় পরিচয় হয় কানাডা-ভিত্তিক গ্যাংস্টার আরশাদীপ সিং গিলের সহযোগী জগজিৎ সিংয়ের সঙ্গে।