বয়কট বহাল বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। শুক্রবার বিচারপতির এজলাসের বাইরে কেউ বিক্ষোভ না দেখালেও এদিন কোনও সরকারি আইনজীবী তাঁর এজলাসে ওঠা কোনও মামলাতেই অংশ নেননি। প্রায় ৩০টি মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী অনুপস্থিত ছিলেন।আসানসোলের মূক বধির ধর্ষিতা মামলায় সরকারি আইনজীবী না আসায় পুলিশ নিজেই রিপোর্ট জমা দেয়। এই ঘটনায় বিপক্ষের আইনজীবীদের প্রশ্ন তোলেন, সরকারি পক্ষের আইনজীবীরা বয়কটকারীদের সমর্থন করছেন কি না তা নিয়েই। তা যদি না হয় তবে কেন তাঁরা এজলাসে শুনানি চলাকালীন কেন অনুপস্থিত সরকারি আইনজীবীরা তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। আর এই অচলাবস্থার জেরে এদিন বেশ কিছু মামলার শুনানি হয়নি বিচারপতি মান্থার এজলাসে। এদিকে এই ঘটনায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, ‘আমার উপর মামলায় হাজির না হওয়ার কোনও নির্দেশ নেই। ওই এজলাসে আমার যে সব মামলা রয়েছে তাতে আমি অংশ নিচ্ছি। বাকি সরকারি আইনজীবীরা কেন যাচ্ছেন না তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়।’
এদিন বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিদলের হাইকোর্টে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রে খবর। দিল্লির কয়েক জন আইনজীবীও কলকাতা হাইকোর্টের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত, বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কট এবর পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলা নিয়ে কাউন্সিলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন একদল আইনজীবী।এরপরই বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এতেই পরিষ্কার, হাইকোর্টে আইনজীবীদের একাংশের আচরণে তারাও যথেষ্ঠ ক্ষুব্ধ। এদিকে সমগ্র ঘটনায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নিজের পর্যবেক্ষণ, আইনজীবীদের একাংশ এজলাস কক্ষ বাইরে থেকে আটকে রাখার চেষ্টা করেছিলেন।অন্য আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী এবং আদালতের কর্মচারীদের এজলাসে ঢুকতে বাধা দিয়ে তারা বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপেরই চেষ্টা করেছেন।পাশাপাশি যে পোস্টার লাগানো হয়েছে তাতে মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। এ ক্ষেত্রে যোধপুর পার্কে তাঁর বাড়ি এবং কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরের আশপাশে যে পোস্টার সাঁটা হয়েছিল, তা নিয়ে বিচারপতি মান্থা জানান, পোস্টারের অভিযোগগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং জনগণের মধ্যে আদালতের এক্তিয়ারকে হেয় করার উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজ করা হয়েছে।একইসঙ্গে ভয় দেখানোরও চেষ্টা হয়েছে।ফলে সব মিলিয়ে আদালতের কার্যপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানান বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।