যত কাণ্ড বীরভূমে! একজনের হাতেই খোলা হয়েছে ব্যাঙ্কের ১৫০টি অ্যাকাউন্ট, এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আধিকারিকদের। এদিকে গোরু পাচার কারণে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার এই মামলার তদন্তে সিউড়ির ডিস্ট্রিক্ট সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে অভিযান চালান সিবিআই আধিকারিকরা। আর এই অভিযানে সামনে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের প্রচুর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গোরু পাচারের কোটি কোট কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এরকম সন্দেহজনক ১৫০টি অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে সিবিআই। এই ১৫০টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ইতিমধ্যেই ৫৪ টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে সিবিআই। বাকি অ্যাকাউন্টগুলির ওপর নজর রাখছেন তাঁরা। এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, গ্রামের গরীব চা।ষিদের থেকে কোনও ভাবে নথি জোগাড় করে ব্যাঙ্কের এই অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছে। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্মে থাকা সই গুলির হাতের লেখা একই ধরনের। সিবিআইয়ের অনুমান কোনও একজন ব্যক্তিই অ্যাকাউন্টগুলি খুলেছেন।এ ব্যাপারে হাতের লেখা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার কথাও ভাবছে সিবিআই। একইসঙ্গে সিবিআইয়ের তরফ থেকে এও দাবি করা হ্চছে, ব্যাঙ্কের লেনেদেনে রাজ্য খাদ্য দফতরেরও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কের সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য ও অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার স্বরূপ দে-র নেতৃত্বে চলে অভিযান।এরপরই তদন্ত চলাকালীন ব্যাঙ্ক থেকে নিজস্ব পেন জ্রাইভে তথ্য সংগ্রহ করেন তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।এর পাশাপাশি ব্যাঙ্কের নতুন ম্যানেজার অভিজিৎ সামন্ত ও প্রাক্তন ম্যানেজরা ইন্দ্র গুরুং-কেও জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সূত্রে এমন খবরও মিলছে, এই জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন সিবিআই অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য। রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা সব জানি। যা জানেন বলে দিন, নইলে আপনাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।‘
এদিকে গোরু পাচার কাণ্ডে ইতিমধ্যেই জেলে অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনও সিবিআইয়ের হাতে বন্দি। এদিকে ২৮ দিন পর অনুব্রতকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়েছিল এদিন। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে খারিজ হওয়ার পর অনুব্রতর আইনজীবীরা এদিন আর জামিনের আবেদন করেননি। অনুব্রত ও সায়গলকে আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। ব্যাঙ্কে সিবিআই অভিযানে অনুব্রতর বিপদ বাড়ে কিনা, সেটাই এখন দেখার।