শরীর কি ক্লান্ত লাগে? দিনভরের কাজে এনার্জি আসে না! আট ঘণ্টা ঘুম হলেও মনে হয়, তেমন এনার্জি আসছে না, ঘুমঘুম ভাব?
এমনটা নিয়মিত হতে থাকলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে।অনেকেই ভাবেন অতিরিক্ত কাজের জন্য শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। তবে সমস্যাটা আরও গভীরে। মেয়েদের তো বটেই, ছেলেদের রক্তে আয়রনের ঘাটতিও এই উপসর্গের কারণ হতে পারে। এর ফলে মাথা ধরা, ক্লান্ত লাগা, চামড়া ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া সহ একাধিক সমস্যা হতে পারে।
রক্তের কোষে ঠিকমতো অক্সিজেন না পৌঁছন, প্রায়শই হাই ওঠা, বসলেই চোখ জুড়িয়ে আসা, ত্বকের জেল্লা হারিয়ে যাওয়া এই সব হল আয়রণের ঘাটতির সাধারণ লক্ষণ।শরীরে নিয়মিত ভাবে এই সব লক্ষণ দেখা দিলে সাবধানে থাকতে হবে। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষাও করিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে হিমোগ্লোবিনের পরীক্ষা ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু পরীক্ষা করান।
আয়রনের অভাবে অ্যানিমিয়া হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে যেটা খুব সাধারণ একটা সমস্যা। ছেলেদের শরীরেও আয়রণের ঘাটতি হতে পারে। আয়রণ কম হলে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও বেশ কয়েকটা কমে যায়। রক্তাল্পতা মূলত তিনটি কারণে হয়। সেগুলি হল রক্তক্ষয়, লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন কমে যাওয়া এবং লোহিত রক্তকণিকা নষ্ট হয়ে যাওয়া। এই তিন কারণে রক্তের মধ্যে আয়রণের পরিমাণ কমে যায়। খাদ্যে পুষ্টির অভাবে রক্তাল্পতা হয়। যে মহিলাদের ঋতুস্রাবের পরিমাণ অতিরিক্ত হয় তাদের ক্ষেত্রে অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা খুব বেশি। দীর্ঘমেয়াদি কোনও অসুখের ফলেও রক্তাল্পতা হতে পারে। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অর্ষে ভুগছেন, যাঁরা আবার বহুদিন ধরে ক্রনিক রেনাল ফেইলিওর অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি বৃক্কীয় কার্য্যহীনতায় ভুগছেন তাঁদেরও অ্যানিমিয়া হতে পারে।
রোজকার মাছ, মাংস থেকে আয়রনের জোগান পাওয়া যায় ঠিকই তবে উদ্ভিজ প্রোটিনও কিন্তু নিয়ম করে খেতে হবে। ডিম, মাছ থেকে শরীর ৪০ শতাংশ আয়রন শোষণ করলেও বাকিটা করে উদ্ভিজ খাবার থেকে। রোজ ভাতের সঙ্গে পাতি লেবু, যে কোনও শাক ভাজা খেতে পারলে খুবই ভাল। এছাড়া ব্রকোলি, বিভিন্ন ডাল, বাদাম, নানা ধরনের বীজ, ব্রাউন রাইস এসব খেতে পারলেও শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়।অনেকেই আবার নিয়মিত ভাবে আয়রনের সাপ্লিমেন্ট খান। এতেও কাজ হয়। তবে এই সব সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পাশাপাশি ঠিক ভাবে খাবার খেতে হবে। আয়রন বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়।