মামলা করে চাকরি পাওয়ার পর ব়্যাঙ্কিং নিয়ে প্রশ্ন, হাই কোর্টের দ্বারস্থ ববিতা

কলকাতা: অন্যায় ভাবে চাকরি হয়েছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার। তাঁর চেয়ে এসএসসি-তে ভালো ব়্যাঙ্ক করেও চাকরি না পাওয়ায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার। দীর্ঘ লড়াইয়ে পেয়েছেন শিক্ষিকার চাকরিও। কিন্তু এবার  সেই ববিতারই র‌্যাঙ্কিং নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আর তার জেরে ফের কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ ববিতা। তাঁর আবেদনপত্র গ্রহণ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা।

২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন ববিতা সরকার। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত মেধাতালিকায়  ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল তাঁর। সাধারণত প্যানেল লিস্টে থাকা কর্মপ্রার্থীদের চাকরি হওয়ার পর ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরি প্রার্থীদের পালা আসে। কিন্তু শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ের বাসিন্দা ববিতা সরকারের চাকরি আর জোটেনি। তারই মধ্যে তালিকা প্রকাশের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মপ্রার্থীরা।ববিতা সরকারের নাম ছিল ২০ নম্বরে। কিন্তু দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর তিনি জানতে পারেন তাঁর নাম চলে গিয়েছে পিছনে। অদৃশ্য হাতের ম্যাজিকে এক নম্বরে পৌঁছে গিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা। এরপরই ন্যায় বিচারের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের  দ্বারস্থ হন ববিতা সরকার। অঙ্কিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।

এবার ববিতার নম্বর নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায়। তাঁর দাবি, অ্যাকাডেমিক কোয়ালিফিকেশনে ববিতার পাওয়ার কথা ছিল ৩১ নম্বর। কিন্তু পর্ষদের তরফে তাঁকে দেওয়া হয় ৩৩। যার জেরে প্যানেলের এগিয়ে আসেন ববিতা। পরবর্তীতে অঙ্কিতার নাম প্যানেলে ঢোকায় ববিতার নাম নেমে যায় ২০ নম্বরে। অনামিকার দাবি, সঠিক নম্বর অনুযায়ী প্যানেলে ববিতার নাম থাকত ২৬ নম্বরে। সেক্ষেত্রে ববিতার জায়গায় থাকতেন অনামিকা। অর্থাৎ অঙ্কিতার খোয়া যাওয়া চাকরি পাওয়ার কথা ছিল তাঁরই। র‌্যাঙ্কিং নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আরও একবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ ববিতা।

ববিতার বক্তব্য, মামলা চলাকালীন অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩ জানায় এসএসসি। কিন্তু যখন ওএমআর শিটের বিতর্কের মাঝে ফলপ্রকাশ করা হয়, তখন দেখা যায়, তিনি ৩১ পেয়েছেন। এদিকে, এই ২ নম্বর কম থাকায় অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীরা দাবি করতে থাকেন, তিনিও সঠিকভাবে চাকরি পাননি। এই ধরনের একটি অভিযোগ ওঠায়, তিনি নিজেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এসএসসি যে তথ্য দিয়ে এই নম্বর জানিয়েছিল, সেক্ষেত্রে তাঁর কী করার রয়েছে? ববিতার হয়ে মামলাটি দেখছেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, এসএসসি-এর এই ভুল আবার আরেকটা বিতর্কের সূত্রপাত করে দিয়েছে। বুধবার এই মামলার শুনানি। এসএসসি-কে জানাতে হবে, আসলে এই ভুল তথ্য কীভাবে তারা দিয়েছিল?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − 4 =