বর্ষবরণের রাতে ট্র্যাফিক বিধি না মানায় গ্রেপ্তার শতাধিক

নতুন বছরকে স্বাগত জানাল কলকাতাবাসী। আর এই নববর্ষ উদযাপনে প্রত্যেকেই প্রতিটি মুহূর্ত যেন উপভোগ করেছে চেটেপুটে। রাতভর চলেছে খানাপিনা, দেদার উৎসব। অনেককেই দেখা গেছে ট্র্যাফিকের বিধিনিষেধকে বুড়েো আঙুল দেখিয়ে গাড়ি চালাতে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ছুটেছে রাস্তায়। আর মত্ত অবস্থাতেও বাইক আরোহীর দাপট দেখা গিয়েছে শহরের নানা জায়গায়। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতি থেকে শনি এই গত তিনদিনে এ শহরে মোট ১৭৩ জনকে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হয়। হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হয় ১৪৭ জনকে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য গ্রেপ্তার ১৯৬ জন। অতিরিক্ত আরোহী সহ বাইর রাইডের জন্য গ্রেফতার করা হয় ৮৯ জনকে।

এদিকে বর্ষবণের রাত নিয়ে লালবাজারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর রাত ৯টার পর থেকে যে পরিমাণ হেলমেটহীন বেপরোয়া গতির বাইক দেখা গিয়েছে, তার থেকে দেশের দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যাও কম। কেবলমাত্র হেলমেটবিহীনই নয়, চালকের পিছনে দু’জন-তিনজন করে বসেও বাইক রাইড করতে দেখা যায় শনিবার রাতে। আর সেই কারণে কসবা, যাদবপুর, রবীন্দ্র সরণি, বিকে পাল অ্যাভিনিউ, সিআইটি রোড, জে এল সরণি এবং এস এন ব্যানার্জি রোড থেকে সর্বাধিক সংখ্যক ট্র্যাফির আইন ভঙ্গকারীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বেহালা-জোকা এলাকায় মত্ত চালকদের সংখ্যা ছিল বেশি।

এদিকে বছরের প্রথমদিন সকাল হতে না হতেই শহর কলকাতায় একের পর এক দুর্ঘটনার খবর। মধ্যরাতে বেপরোয়া বাইকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন এক ট্রাফিক সার্জেন। নাকা চেকিংয়ের সময় বেপরোয়া গতিতে আসা বাইকটিকে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন সার্জেন্ট তপন চক্রবর্তী। তবে দ্রুতগতিতে আসা বাইকটি তাঁকে ধাক্কা মেরে চম্পট দেয়। গুরুতর চোট লাগে তাঁর। সহকর্মীদের সাহায্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট। এরই পাশাপাশি রবিবার ভোর ৬টা নাগাদ ই এম বাইপাসের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় অজয়নগর মোড়ের কাছে একটি চারচাকা দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়। গাড়ি চালক ছাড়াও এক শিশু সহ ছিলেন তিন আরোহী। স্থানীয় সূত্রে খবর, কালভার্টের উপর একটি স্তম্ভে ধাক্কা মারে গাড়িটি। তাতে গাড়ির সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর গাড়ির এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়ায় কোনও রকমে রক্ষা পান যাত্রীরা। এই গাড়িতে যাঁরা ছিলেন তাঁদের প্রত্যেকেরই চোট লাগে। আহতদের বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ষবরণের উদযাপন সেরে এই পরিবারের সদস্যরা পাটুলির দিকে যাচ্ছিলেন। আচমকাই গাড়ি চালাতে চালাতে চালকের চোখ ঘুমে ঢুলে পড়ে। আর তাতেই ঘটে এই দুর্ঘটনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − 5 =