কৃষক বিক্ষোভে ফের উত্তপ্ত দিল্লি

কৃষক বিক্ষোভে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দিল্লি সীমান্তে। সোমবার একাধিক দাবিতে ফের পথে কৃষকদের একাংশ। তিন কৃষি আইন বাতিল ও কৃষির ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে কয়েক বছরের আগের কৃষক বিক্ষোভ এখনও টাটকা। ফের একবার একাধিক দাবিতে দিল্লিতে ভিড় জমাতে দেখা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কৃষকদের। এদিন তাঁধের তরফ থেকে প্রতিবাদ করা হয় কেন্দ্রের বর্তমান কৃষি নীতিরও। কিষাণ সংঘের তরফ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, দাবি না মানলে, ফের আন্দোলনের। এই বিক্ষোভের উদ্যোগে আরএসএসের সহযোগী ভারতীয় কিষাণ সংঘ। আর এদিনের এই বিক্ষোভ মিছিলে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষকদের এসে যোগ দিতেও দেখা যায়। বিক্ষোভকারী কৃষকরা জানান, কৃষিপণ্যের উপর জিএসপি আরোপ যাতে না করা হয়, সে ব্যাপারে ভারতীয় কিষাণ সংগঠন (বিকেএস)-এর পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি করা হয়েছে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সমস্ত কৃষিপণ্যকে জিএসটি মুক্ত করা।এর পাশাপাশি চাষের ক্রমবর্ধমান খরচ বৃদ্ধি হওয়ায়, কৃষকদের দেওয়া প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির পরিমাণ বাড়াতে হবে বলেও দাবি করা হয়।  এরই পাশাাপাশি খাদ্যশস্যে ভর্তুকির দাবি করার পাশাপাশি কৃষকদের ডিবিটি-এর আওতায় আর্থিক সহায়তার জন্য সরকারের কাছে আবেদনও করা হয়। এছাড়া, একটি সুনির্দিষ্ট কৃষি পণ্যের আমদানি-রফতানি নীতি চালুরও দাবি করা হয়েছে ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের পক্ষ থেকে।

এদিনের এই সমাবেশের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের কৃষি নীতিরও সমালোচনা করেন ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মোহিনী মোহন মিশ্র। মঞ্চ থেকে তিনি জানান, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও ভারতীয় কৃষকরা ন্যায়বিচার পাননি। সঙ্গে মেলেনি কৃষির ন্যূনতম মূল্যের দাবিও। শুধু তাই নয়, মোদি সরকারের বর্তমান কৃষিনীতি কৃষক বিরোধী বলেও মনে করেন ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের ওই নেতা। আর এই ভ্রান্ত  নীতির বিরুদ্ধে সচেতন করাই সমাবেশের মূল লক্ষ্য বলেও জানান ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক। একইসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, সরকার তাঁদের দাবি না মানলে, আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন তাঁরা। এদিকে কৃষকদের তরফ থেকেও দাবি করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সীমা বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা উচিত বলে জানায় ভারতীয় কৃষাণ সংগঠন। বর্তমানে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের আওতায় কৃষকদের ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।

এদিকে সূত্রে খবর, প্রায় ৫৫ হাজারের বেশি কৃষক এদিনের এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য রাজধানীর বেশ কয়েকটি অংশে ব্যাপক যানজটও তৈরি হয় এদিন। তবে এমনটা হতে পারে আঁচ করতে পেরেই দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে মহারাজা রঞ্জিং সিং মার্গ, মিরদর্দ চক, মিন্টো রোড, আজমেরি গেট, চমন লাল মার্গ, দিল্লি গেট সহ বেশ কয়েকটি স্থান এড়িয়ে চলার জন্য পরামর্শও দেওয়া হয়।

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − seven =