আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মুখোমুখি হতে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মমতা-শাহ আলাদা ভাবে কথা হবে কি না সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক বৈঠকে আসছেন না বলেই এখনও পর্যন্ত সূত্রে খবর। সেখানে বিহারের তরফে উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং ওড়িশার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তুষারকান্তি বেহেরা প্রতিনিধিত্ব করবেন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন অবশ্য বৈঠকে যোগ দেবেন বলেই জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রধানরাও থাকবেন বৈঠকে। যোগ দেবে সদস্য রাজ্যগুলির সচিব পর্যায়ের প্রতিনিধিদল।
এদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, ডিভিসি-র জলছাড়া, মহানন্দা ও ময়ূরাক্ষীর জল বণ্টন নিয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। কারণ, এই সমস্যা প্রতি বছরেই ভুগতে হয় বঙ্গবাসীর এক বিরাট অংশকে। প্রতি বছরই ডিভিসির জল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়। আবার, মহানদীর জল নিয়ে বিরোধ বাধে ওড়িশার সঙ্গে বিহারের। পাশাপাশি ফ্রেট করিডর তৈরির জমি অধিগ্রহণ, বনাঞ্চল, খনি-সহ প্রায় ৪০টি বিষয় আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। এদিকে ফ্রেট করিডর তৈরিতে জমি অধিগ্রহণের কাজ চার রাজ্যে সমান গতিতে এগোচ্ছে না। অথচ, শিল্পের বিকাশ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই করিডর ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যুতের গ্রিড ও আন্তঃরাজ্য সীমানা দিয়ে জালনোট এবং মাদক চোরাচালান-সহ নানা অপরাধ মোকাবিলার বিষয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে দাবি, বৈঠকে তারা একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলে ধরবে। যেখানে পরিষদের সদস্য রাজ্যগুলির পারস্পরিক সমন্বয়ে জোর দেওয়া হবে৷
প্রসঙ্গত, এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল হবে ৫ নভেম্বর। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যস্ততার কারণে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হয়। এ বার অবশ্য নির্ধারিত দিনেই বৈঠক হচ্ছে। শুক্রবার কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন শাহ। পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের চার রাজ্য এই পরিষদের সদস্য। বাংলা বাদে বাকি তিনটি হলো, বিহার, ওডিশা ও ঝাড়খণ্ড। মূলত প্রতিবেশী রাজ্যগুলির মধ্যে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো-ক্ষেত্রে যৌথ আলোচনা, সমাধানের পথ খুঁজতে বৈঠক হয় প্রতি বছর। এ বার আয়োজক পশ্চিমবঙ্গ। রাজনাথ সিং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন একবার নবান্ন সভাঘরে এই বৈঠক হয়েছিল।
এদিকে নবান্ন সূত্রে এ খবরও মিলছে, বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতার।