ফের সল্টলেকে পর্দাফাঁস সাইবার প্রতারকদের, ধৃত ১১

 

 

 

কলকাতা: সাইবার অপরাধের ডেরা ভুয়ো কল সেন্টার। আর কলকাতায় ব্যাং-এর ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ঝাঁ- তকতকে এমনই সব অফিস। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই কী ধরনের বিপুল প্রতারণা চালানো হতে পারে এই সব অফিস থেকে। এবার এই সব অফিস এখন পুলিশি নজরদারির আওতায়। কারণ, ইন্টারনেটের যুগে বিল পেমেন্ট থেকে শপিং, খাওয়াদাওয়া থেকে অন্যান্য যেকোনও আর্থিক লেনদেন সব জায়গাতেই চলছে ইউপিআই  পেমেন্ট। মানুষের এই অনলাইন নির্ভরতার সুযোগেই ক্রমেই যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে প্রতারণা চক্র। কারণ, কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিমেষে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এদিকে গত কয়েক মাসে কলকাতার সল্টলেকও নিউটাউন চত্বরে ধরা পড়েছে একের পর এক অনলাইন প্রতারণা চক্র। আর এখানেই বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে তাহলে কী কলকাতায় পা রেখেছে জামতাড়া গ্যাং? কারণ, তারা হয়োত বুঝেছে কলকাতা হল প্রতারণা করার সবথেকে বড় এক জায়গা। আর সহজে অফিস ভাড়াও মিলছে এই সল্টলেকের অফিস পাড়ায়। আর সেখান থেকে নিশ্চিন্তে চালানো যাচ্ছে ভুয়ো কল, মেসেজ বা অন্যান্য উপায়ে প্রতারণা চক্র। আর এই প্রতারণা শুধু কলকাতাতেই নয়, ছড়িয়ে পড়ছে বিদেশেও। সৌজন্যে আধুনিক প্রযুক্তি।

ঠিক যেমনটি ঘটছিল মার্লিন ইনফিনিটি টাওয়ারে। সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার মার্লিন ইনফিনিটি টাওয়ারে হঠাৎই হানা দেয় বিধাননগর ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। এরপরই সামনে আসে টেক সাপোর্টের নাম করে চলা বিশাল প্রতারণা চক্রের হাল-হকিকত। আপাতত ১১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে কম্পিউটার, হার্ড ডিস্ক, ল্যাপটপ, স্মার্ট ফোন ও রাউটার। বহু ডেবিট কার্ডের পাশাপাশি চেক বই, রাবার স্ট্যাম্প, কাস্টমার-ডেটা সহ অন্যান্য বহু জাল নথিও মিলেছে।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানান, , অফিস থেকেই বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করা হচ্ছিল টেক সাপোর্ট দেওয়ার নামে। মূলত অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার নাগরিকদের ‘ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল’ ব্যবহার করে ফোন করতেন প্রতারকরা। শিকার ফাঁদে পা দিলেই কম্পিউটারে সফ্টওয়্যার ডাউনলোড করার পরামর্শ দেওয়া হতো। সেটা ডাউনলোড হলেই হ্যাক হত যন্ত্র। মোবাইল বা ব্যক্তিগত ল্যাপটপ, সবকিছুই এভাবে চলে আসত প্রতারকের হাতের মুঠোয়। এরপর প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা হত, তারপর ‘সুইফট ট্রান্সফার’ নামক সফ্টওয়্যারের সাহায্যে সেই অর্থ নিয়ে আসা হত ভারতীয় অ্যাকাউন্টে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × five =