হাই কোর্টের এনরোলমেন্ট ফর্মে  কেন মায়ের নাম উল্লেখ হবে না! বার কাউন্সিলের বক্তব্য জানতে চাইল আদালত

শুভাশিস বিশ্বাস

কলকাতা: অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট ফর্মে কেন শুধু বাবা বা স্বামীর নামের জায়গা থাকবে? কেন থাকবে না মায়ের নাম উল্লেখ করার জায়গা? এ নিয়েই দায়ের হয়েছে মামলা। এই মামলায় এবার বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং রাজ্যের বার কাউন্সিলের বক্তব্য জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ।
অভিযোগ, পিতৃতান্ত্রিক ধারা বহন করছে খোদ হাই কোর্ট। কারণ, বর্তমানে যে অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট ফর্মটি রয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাবার নাম এবং স্বামীর নাম উল্লেখ করার জায়গা রয়েছে। কোনও জায়গা নেই মায়ের নাম উল্লেখ করার। অর্থাৎ, রাজ্য বার কাউন্সিল কেবলমাত্র পিতা এবং স্বামীর নামের তথ্য চেয়ে এটিই ইঙ্গিত করে, যে একজন অ্যাডভোকেট হিসাবে নিজেকে নথিভুক্ত করার একমাত্র মাপকাঠি হল তাঁর বাবার অভিভাবকত্ব বা তাঁর বৈবাহিক অবস্থা। আর তা ভারতীয় সংবিধানের ১৪, ১৯(জি) এবং ২১ নং ধারা অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এই ব্যবস্থার বদল করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মৃণালিনী মজুমদার। তাঁর আবেদন, যাতে অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট ফর্মে মায়ের নামও উল্লেখ করার জায়গা থাকে। মামলাকারী মৃণালিণী মজুমদারের বক্তব্য, বর্তমানে যে অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট ফর্মটি রয়েছে, সেখানে মায়ের নাম উল্লেখ করার জায়গা না থাকার ফলে তা সিঙ্গল মাদারদের জন্য সমস্যার। এটা বৈষম্যমূলক। শুধু তাই নয়, আইনের চোখে তাঁদের মৌলিক অধিকারীর বিরোধী। পাশাপশি মামলাকারী এও জানান, একজন সিঙ্গল মাদার-এর সন্তানও দেশের নাগরিক এবং তাঁর মৌলিক অধিকার কেউ লংঘন করতে পারে না। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছিল। এরপরই মামলায় বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং রাজ্যের বার কাউন্সিলের থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে বক্তব্য জানতে চায় হাইকোর্ট। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 1 =