সোমবার আফতাবের নারকো টেস্ট, শনিবার পাঠানো হল তিহার জেলে

শুভাশিস বিশ্বাস

আফতাব আমিন পুনাওয়ালার এবার নারকো টেস্ট করা হবে, এমনটাই খবর সিনিয়র দিল্লি পুলিশ অফিসার এবং এফএসএলের সূত্রে। আর এই নারকো টেস্ট করা হবে সোমবার। এই টেস্ট করার সময় এফএসএল দল থাকবে। জানানো হয়েছে যে, আফতাবের মেডিক্যাল টেস্ট করানো হবে। সে সুস্থ রয়েছে কি না সেটাও দেখা হবে। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশের বক্তব্য, শ্রদ্ধা ওয়াকারের যে খুনের রহস্য তা পুরোপুরি ভাবে নিস্পত্তি ঘটাতে হলে তার নারকোটিক টেস্ট করাতে হবে। আর আদালত ইতিমধ্যেই এই টেস্ট করানোর নির্দেশও দিয়েছে। একইসঙ্গে আফতাবকেও এই বিষয়ে পুরো কথা জানানো হয়েছে।

এদিকে এই নারকো টেস্ট করাতে গেলে সাইকোলজিক্যাল বিষয়টাকে যেমন দেখতে হয় এবং সে শারীরিক ভাবে সুস্থ কী না সেটাও দেখা প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ‘নারকো টেস্ট করার সময় এনাস্থেসিয়া করতে হয়। এরপর যাকে এনাস্থেসিয়া করা হচ্ছে তার ঠিক ভাবে জ্ঞান থাকে না, তবে পুরো সংজ্ঞাহীন হয়েও যায় না। অল্প অবচেতন থাকে সে। আর ওই অবস্থায় ব্রেন তার ভালো ভাবে সজিয়ে মিথ্যা বলার মতো জায়গায় থাকে না। তখন যেটা বাস্তব সেটাই সে বলে। তবে ওই টেস্ট করানোর জন্য তার শরীরের কী পরিস্থিতি দেখে নেওয়া হয়, মনের পরিস্থিতিও দেখা হয়। যিনি টেস্ট করাচ্ছেন তাকেও সবদিকটা ঠিক আছে কি না সব দেখতে হয়। পাশাপাশি যার উপর এই পরীক্ষা করা হবে তাকে বিশেষ ইনজেকশন দেওয়া হয়। দেওয়া হয় ট্রুথ সেরাম নামে একটি ওষুধও। এর জন্যই সে অবচেতন জায়গায় চলে যায়। এই অবস্থায় সে শুধু কানে শুনতে পায় , কথাবার্তাও বলে তবে অনেক নয়। যেটুকু জিজ্ঞাসা করা হবে সেইটুকু উত্তরই সে দেয়। ওই সময়ে সমানে ওই ব্যক্তির শরীর কেমন থাকছে সেটাও দেখা হয়। না হলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে।

এদিকে দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশ হেপাজত শেষ, শ্রদ্ধা কাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা-কে এবার পাঠানো হল বিচার বিভাগীয় হেপাজতে। শনিবারই তাঁকে তিহার জেলে পাঠানোর কথা। এদিকে শনিবার সকালে আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আম্বেদকর হাসপাতালে। সেখান থেকেই ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে পেশ করা হয় আফতাবকে। দিল্লি পুলিশের তরফে আদালতে আফতাবের হেপাজতের আবেদন জানানো হয়। আদালতে দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, শ্রদ্ধা খুনের কিনারা এখনও হয়নি। বারংবার বয়ান বদল করছে আফতাব। ফলে তদন্তে বেগ পেতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, শ্রদ্ধার কাটা মুণ্ডও এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। খুনের বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য আরও জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে আফতাবকে। পুলিশের এই আর্জি শোনার পর দিল্লি আদালতের তরফে বিচারবিভাগীয় হেপাজতে পাঠানো হয় আফতাবকে। অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই আফতাবের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হয়েছে। শুক্রবারও আফতাবকে পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য দিল্লির রোহিনীর ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আফতাবের পলিগ্রাফ পরীক্ষার প্রি, মেইন ও পোস্ট- তিনটি ধাপই সম্পূর্ণ হয়েছে। এবার তাঁর নারকো পরীক্ষা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − nine =