কলকাতা : ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি এবার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিল প্রশাসন। জল জমিয়ে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
বুধবার সকালে মেয়র ফিরহাদ হাকিম চেতলায় ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি সচেতনতায় প্রচারে নামেন। নিজের ওয়ার্ডে এদিন ঘুরে দেখতে বেরিয়ে কোথাও জঞ্জাল বা জল জমে আছে কিনা সে বিষয়ে নজরদারি চালান তিনি। এদিন কড়া মেজাজে দেখা যায় মেয়রকে। চেতলায় নিজের ওয়ার্ডে ডেঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় রীতিমতো হুঁশিয়ারির দিতে দেখা গেল তাঁকে। পুরসভা নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও নির্মীয়মাণ বহুতলে জল জমে থাকায়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশও দিলেন মেয়র। একইসঙ্গে ওই নির্মাণকার্য বন্ধ রাখার নির্দেশও দেন তিনি।পুরসভা সূত্রে খবর, এর আগে জল জমা নিয়ে নির্মীয়মাণ বহুতলে নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
মশা বাহিত এই রোগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মেয়র বলেন, অনেক বাড়িতে ভাইয়ে-ভাইয়ে সম্পত্তি বিবাদ চলে। ঘরে-ঘরে বিবাদ হয়। তাই ছাদের ট্যাঙ্কের ঢাকাটা কে লাগাবেন, তার ঠিক থাকে না। ফলে সেখানেই তৈরি হচ্ছে সমস্যা। জমা জলে বংশ বিস্তার করছে এডিস মশা। এই পরিস্থিতিতে কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় নেই। এছাড়া এদিন নিজের ওয়ার্ডে সচেতনতা প্রচারও চালান মেয়র। মিছিল করে এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি মাইকেও চালান সচেতনতা প্রচার।এদিন চেতলা, হাটরোড, চেতলা সেন্ট্রাল রোড-সহ বিভিন্ন অলিগলিতে ঘুরে দেখেন মেয়র। এদিন কলকাতার মহানাগরিকের সঙ্গে ছিলেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার৷ বুধবার নিজের ওয়ার্ডে ঘুরে দেখার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ায়ও যান ফিরহাদ হাকিম। ৭৩ নং ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন মেয়রের সঙ্গে ছিলেন।
প্রসঙ্গত কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। ডেঙ্গি রুখতে রাজ্য সরকার এবং কলকাতা পুর নিগমের তরফে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবুও কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না মশাবাহিত এই রোগকে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় মঙ্গলবার নবান্নে এক জরুরি বৈঠক ডাকেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। সেখানে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে তলব করা হয়। একইসঙ্গে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার জেলাশাসক ভার্চুয়ালি সেই বৈঠকে অংশ নেন। মঙ্গলবার ওই বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় নবান্ন থেকে জেলায় জেলায় বিশেষজ্ঞদের টিম পাঠানো হবে। এলাকায় গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে জেলাশাসকদের। বাড়াতে হবে নজরদারি। কোথায় কোথায় আবর্জনা জমছে তা দেখতে মহকুমা শাসক বা বিডিওদের মাঠে নামাতে হবে। সূত্রের খবর, ডেঙ্গু মোকাবিলায় ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।