ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে সমন পাঠাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর্থিক দুর্নীতিতে নজরদারি চালানো এই সংস্থা নোটিসে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তকে ইডির রাঁচির অফিসে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। ঝাড়খণ্ডের একটি খনি-দুর্নীতি মামলায় আর্থিক তছরুপের তদন্ত করছিল ইডি সেই মামলার সূত্রেই ডেকে পাঠানো হয়েছে হেমন্তকে।
এর আগে এই মামলায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ পঙ্কজ মিশ্র-সহ (Pankaj Mishra) আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। জুলাই মাসে খনি দুর্নীতির তদন্তে রাজ্যের একাধিক ঠিকানায় অভিযান চালায় ইডি। সেই সময় পঙ্কজ মিশ্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকার হদিশ মেলে বলে দাবি ইডির। ওই অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। এছাড়াও পঙ্কজের বাড়ি থেকে নগদ ৫ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেন তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। ওই সময় পঙ্কজের বাড়িতে বেশ কয়েকটি চেক মেলে, যেগুলিতে হেমন্ত সোরেনের স্বাক্ষর ছিল।
ইডির চার্জশিট অনুযায়ী পঙ্কজ মিশ্র ঝাড়খণ্ডে খনি দুর্নীতির অন্যতম চক্রী। যিনি মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। মূলত পঙ্কজই হেমন্তের বিধানসভা এলাকায় বেআইনি খনির কারবার সামলাতো, দাবি তদন্তকারীদের। ইতিমধ্যে পঙ্গজ মিশ্র ও তাঁর দুই সঙ্গী বাচ্চু যাদব ও প্রেম প্রকাশের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। এবার হেমন্ত সোরেনকে সমন পাঠিয়ে কড়া বার্তা দিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।
সেপ্টেম্বরেই বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠেছে হেমন্তের নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ড সরকার। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা তথা ঝাড়খণ্ডের জোট সরকারের প্রধান হেমন্ত তাঁর ৩১ জন বিধায়ককে রাজ্য থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন সরকার বাঁচাতে। আশঙ্কা ছিল, এই বিধায়কদের আর্থিক প্রলোভন এবং অন্যান্য বিষয়ে চাপ দিয়ে কিনে নেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি। কিন্তু মোক্ষম সময়ে সেই চেষ্টা আটকে সরকার বাঁচিয়েছিলেন হেমন্ত। সেই সময়েই রাঁচি হাইকোর্টে হেমন্তের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। যার তদন্ত শুরু করে ইডি। বুধবার ওই মামলার সূত্রেই ডেকে পাঠানো হয়েছে হেমন্তকে।