বর্ধমান সানমার্গ চিটফান্ড কাণ্ডে এবার সিবিআইয়ের জালে দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী। দুর্গাপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিংকে মঙ্গলবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দপ্তরে তলব করা হয়। প্রায় দশ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। বয়ানে একাধিক অসঙ্গতির কারণেই এই গ্রেপ্তারি বলে সিবিআই সূত্রের খবর। ধৃত সঞ্জয় সিংকে বুধবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। এদিন সকালে কলকাতা থেকে ট্রেনে ধৃত ব্যবসায়ীকে নিয়ে আসে সিবিআই আধিকারিকরা। আসানসোল স্টেশন থেকে তাকে জেলা আদালতে নিয়ে আসা হয়। এদিন ধৃত সঞ্জয় সিং-এর তিন দিনের সিবিআই হেপাজতের নির্দেশ দেন মহামান্য বিচারপতি। পাঁচ দিনের হেপাজত চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রের খবর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে সঞ্জয় সিং এর কাছ থেকে। যে নথিতে স্পষ্ট হয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা আদান প্রদানের। এদিন ধৃত সঞ্জয় সিংহের হয়ে কোনও আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেনি বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বর্ধমান সানমার্গ চিটফান্ড মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আসানসোল আদালতেই রয়েছেন হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি। সূত্রের খবর রাজু সাহানির মারফতই সঞ্জয় সিং এর কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা এসেছিল এবং সেই টাকা এই ব্যবসায়ীর বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি হয়েছে। ধৃত ব্যবসায়ী বেশ কয়েক বছর ধরে মিডিয়া ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। যে সময় বর্ধমান সানমার্গ নামক এই চিটফান্ড কোম্পানির রমরমা, সেই সময় একটি টিভি চ্যানেলও খুলেছিলেন উক্ত ব্যবসায়ী। বর্ধমান সানমার্গ এর কর্ণধার সৌম্যরূপ ভৌমিকের মাধ্যমে এই চ্যানেলটি তিনি শুরু করেছিলেন। সিবিআই এর দাবি ধৃত সঞ্জয় সিংকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও টাকার উৎস সম্পর্কে জানা যাবে। মূলত এই চ্যানেল ব্যবসায় লগ্নী প্রসঙ্গেই জানতে আগ্রহী সিবিআই। তবে ওই চিটফান্ড সংস্থার কর্ণধার সৌম্যরূপ ভৌমিকের নাগাল এখনও পায়নি সিবিআই। তবে যেটুকু জানা যাচ্ছে এই চিটফান্ড সংস্থায় আমানতকারীদের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে সংস্থার চেয়ারম্যান সৌম্যরূপ ভৌমিক। এবং সেই টাকার একটা বড় অংশ পৌঁছে ছিল হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি ও দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিং এর কাছে। সিবিআই ধৃত ব্যবসায়ীকে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এর মাধ্যমে সেই টাকার খোঁজ চালাবে। এবং আর কোনও কোনও ব্যবসায় আমানতকারীদের টাকা লগ্নি করা হয়েছে তার ও খোঁজ চালাবে সিবিআই। সূত্রের খবর দুর্গাপুরের আরও এক মিডিয়া ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল চিটফান্ড সংস্থার কর্ণধারের। সিবিআইয়ের রাডারে সেই ব্যবসায়ীর নামও ঘোরাফেরা করছে বলে সূত্রের খবর।