সিত্রাংয়ের প্রভাবে বাংলাদেশে মৃত ৩৫ , ড্রেজার ডুবে মৃত ৮ শ্রমিক

সিত্রাংয়ের প্রভাবে আবারও প্রাণহানি বাংলাদেশে। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপকূলে পলি তোলার যন্ত্র (ড্রেজার) ডুবে মারা গিয়েছেন ৮ শ্রমিক। কোনও মতে বেঁচে ফিরেছেন এক জন। সোমবার রাতের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সিত্রাংয়ের প্রভাবে বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৫। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত দেশের ১৪ জেলায় ৩৫ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। এখনও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বরিশালে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মঙ্গলবার খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ত্রাণের জন্য বন্ধ স্কুল চত্বর প্রস্তুতও রাখা হয়েছিল। এদিকে গতকাল রাতেই বাংলাদেশে তাণ্ডব চালানোর পর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ঢাকা ওপর দিয়ে সিলেট হয়ে ভারতে প্রবেশ করবে বলে জানা গিয়েছিল। তারপর এটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। মঙ্গলবার ভোরে ভারতের মৌসম ভবনের তরফে টুইটে জানানো হয়েছে, ‘গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। রাত ২:৩০ টে নাগাদ ঢাকার ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ও আগরতলা থেকে ৬০ কিলোমিটার থেকে উত্তর-পূর্বে অবস্থান করছে সিত্রাং। পরবর্তী ৩ ঘণ্টায় তা দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং তারপর পরবর্তী ৬ ঘণ্টায় আরও দুর্বল হবে।’

সোমবার রাতে মিরসরাই উপকূলের সন্দ্বীপ চ্যানেলে পলি তুলছিল ড্রেজারটি। তখনই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ডুবে যায় সেটি। মৃত শ্রমিকেরা পটুয়াখালির বাসিন্দা। এক জন শ্রমিক সাঁতরে পারে আসতে পেরেছেন। তাঁর নাম মহম্মদ সালাম। তিনি জানিয়েছেন, প্রবল ঝোড়ো হাওয়া আর জলোচ্ছ্বাসের কারণে ড্রেজারটি ডুবে যায়। মিরসরাইয়ের এক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, ড্রেজারটি ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আশপাশের অন্য ড্রেজারের শ্রমিকরা নৌকো নিয়ে উদ্ধারের জন্য উপস্থিত হন। কিন্তু ততক্ষণে মারা গিয়েছেন ৮ শ্রমিক।

সোমবার মাঝরাতে বরিশালের তিনকোণা এবং সন্দ্বীপের মাঝে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। তার পরেই শক্তি খুইয়ে সে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। কিন্তু তাতেও প্রাণহানি আটকানো যায়নি। বাংলাদেশের ছয় জেলায় পাঁচ মহিলা, দুই শিশু-সহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাত জনের মৃত্যু হয়েছে গাছ চাপা পড়ে। দু’জন মারা গিয়েছেন নৌকোডুবিতে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে রাজধানী ঢাকাতেও। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। কয়েকশো গাছ উপড়ে পড়ে গিয়েছে। তার জেরে তীব্র যানজট। জলমগ্ন বেশ কিছু এলাকা। ঢাকার বেশ কিছু স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে মঙ্গলবার। তবে অনেকগুলি খোলাও ছিল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =