মালদা: প্রকাশ্য রাস্তায় জেলা তৃণমূলের এক শিক্ষক নেতাকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল। রক্তাক্ত অবস্থায় তৃণমূলের ওই নেতাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার হরদমনগর এলাকায়। বাজার করতে যাওয়ার পথেই প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তৃণমূল নেতাকে খুনের ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরে। এই ঘটনায় হামলাকারী শঙ্কর দাস ও তার দলবলের বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত তৃণমূল নেতার পরিবার। পুলিশ এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। হামলাকারীরা কংগ্রেস কর্মী বলে জানিয়েছে আক্রান্তের পরিবার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম ওই তৃণমূল নেতার নাম রামচন্দ্র দাস (৫৫)। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস জেলা কমিটির সদস্য।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সাড়ে ১৬ শতক জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল প্রতিবেশী শঙ্কর দাসের সঙ্গে। শঙ্কর দাস এলাকার দাপুটে কংগ্রেস নেতা। মঙ্গলবার রামচন্দ্র দাস বাজার গিয়েছিল। হঠাৎ করে বাজারের মধ্যে ওই তৃণমূল নেতাকে ঘিরে ধরে প্রতিবেশী শঙ্কর দাস ও তার দলবল। সঙ্গে শঙ্কর দাসের স্ত্রী ছেলেও ছিল। শুরু হয় বচসা। চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বচসা থেকে হাঁসুয়া নিয়ে রামচন্দ্রে গলায় কোপ মারতে যায়। হাঁসুয়ার কোপ গিয়ে লাগে ডান হাতে ওপরে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ছুটে আসে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে ছুটে আসেন রামচন্দ্র দাসের পরিবারের সদস্যরা। ততক্ষণে শঙ্কর দাস সহ তার দলবল এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। গোটা ঘটনায় ১১ জনের নামে ভালুকা ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করেছেন জখম রামচন্দ্র দাসের ছেলে সৌভিক দাস। অভিযোগ হাতে পেয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ।
এই হামলার ঘটনায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের বস্ত্র দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, দলের এক নেতাকে এভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। পুলিশ যাতে সব অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে সেই দাবিও করা হয়েছে।
এদিকে কংগ্রেসের জেলার কার্যকরী সভাপতি কালী সাধন রায় জানিয়েছেন, হরিশ্চন্দ্রপুরের ঘটনায় পারিবারিক বিষয়। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় জড়িত নেই। আমাদের দলের কোনও কর্মীরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নেই।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত ভালুকা ফাঁড়ি ইনচার্জ ঝোটন প্রসাদ জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।