এলইডি লাইটের চমকে ফিকে হচ্ছে মাটির প্রদীপের ঐতিহ্য

কালীপুজো মানেই আলোর উৎসব। সারা ভারতবর্ষের মানুষ দীপাবলিতে মেতে ওঠেন। ঘরে ঘরে জ্বলে আলো। সারা বাড়ি সাজানো হয় প্রদীপের আলো দিয়ে। তাই দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। এই জন্য মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা থাকে চরমে। কিন্তু আধুনিক যুগে এলইডি লাইটের চাপে হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির প্রদীপের ঐতিহ্য। অথচ মাটির প্রদীপ তৈরি করতে কত পরিশ্রম করতে হয় কারিগরদের। উল্লেখ্য, প্রথমে মাটি দিয়ে এই প্রদীপ তৈরি করে রোদে শুকানো হয়। তারপর আগুনে পুড়িয়ে মাটির প্রদীপ তৈরি করে বাজারে বিক্রি করা হয়। আলোর উৎসব ও কালী পুজোর জন্য প্রদীপ তৈরির কাজে ব্যস্ত কারিগরা। এই বছর প্রদীপ কেনার চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্ন করতেই, হতাশার সুরে প্রদীপ তৈরির কারিগররা জানায় আধুনিক যুগ যত এগিয়ে যাচ্ছে ততই সাবেকি আনা থেকে মানুষ দূরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ এই সব মাটির প্রদীপ দিয়ে আর ঘর সাজাতে চাইছে না। বর্তমানে নানা প্রকার এলইডি লাইট বাজারে আসাতে প্রদীপের বিক্রি কমে গেছে। এই বছর করোনা পরিস্থিতি ও বন্যার জেড়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমা। তাই হুগলি জেলার আরামবাগ,গোঘাট, পুরশুড়া ও খানাকুলের কুমোড় পাড়ার মৃৎশিল্পীদের মধ্যে হতাশার সুর দেখা যাচ্ছে। কেবল পুজোর জন্য সামান্য কয়েকটি মাটির প্রদীপ কিনছে এলাকার মানুষ। তবে প্রাচীন অভিজাত পরিবার মাটির প্রদীপ কিনছেন। এই বিষয়ে আরামবাগের এক কারিগর জানায়, এই বছর মাটির প্রদীপের তেমন বিক্রি নেই। এলইডির চাপে এলাকার মানুষ চাহিদা মতো কিছু কিনছে। আমাদের সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ছে।
সরকার যদি অনুদান দেয় ভালো হয়। অপরদিকে শঙ্খদীপ পাল নামে আর এক কারিগর বলেন, মাটির প্রদীপ তেমন বিক্রি নেই। দীপাবলি উৎসবে এখন সবাই এলইডি লাইট দিয়ে বাড়ি সাজাচ্ছে। আগের মতো আর ঐতিহ্য মেনে মাটির প্রদীপ কেউ কিনছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − fourteen =