ব্যাটে দাপট রাহুল-সূর্যকুমারের ও শামির শেষ ওভারের ম্যাজিকে অস্ট্রেলিয়াকে হারাল ভারত

গত জুলাই থেকে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের বাইরে জাতীয় দলের তারকা জোরে বোলার মহম্মদ শামি। তাই জসপ্রীত বুমরার বদলে তাঁকে দলে নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সুনীল গাভাসকরের মতো কিংবদন্তিও। তবে শামির ফিটনেস ও অভিজ্ঞতা উপর ভরসা রেখেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। শামির ভরসার মান রাখলেন। ‘সহেসপুর এক্সপ্রেস’ বুঝিয়ে দিলেন কেন তিনি বিশ্বসেরাদেরই একজন। সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে শামিই ছিল ভারতের সারপ্রাইজ প্যাকেজ। ১৯ ওভার পর্যন্ত তিনি ছিলেন অব্যবহৃত। কিন্তু ২০ নম্বর ওভারেই তাঁর হাতে বল তুলে দেন রোহিত শর্মা। অস্ট্রেলিয়ার জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ১১ রান। শামি বল হাতে আগুন ঝলসালেন। পরপর চার বলে একাই তুলে নিলেন চার উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার নিশ্চিত জেতা ম্যাচের স্বপ্ন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেন বাংলার হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা জোরে বোলার। অ্যারন ফিঞ্চ ভাবতেও পারেননি যে, এত বড় চমক তাঁর জন্য তোলা আছে। শেষ ওভারে শামির সৌজন্যেই ভারত ৬ রানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অনেকটা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিল।
এদিন ব্রিসবেনে অ্যারন ফিঞ্চের অস্ট্রেলিয়া টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান তোলে। কেএল রাহুল ও রোহিত শর্মার চেনা জুটি ওপেন করতে নেমেছিলেন। ৭.৩ ওভারে তাঁরা তুলে ফেলেন ৭৮ রান। রাহুল ৩৩ বলে ৫৭ রান করে আউট হয়ে যান। ম্যাক্সওয়েলের বলে অ্যাশটন আগারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। এরপর অধিনায়ক রোহিত আউট হন অ্যাস্টন আগারের বলে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। ১৪ বলে ১৫ রান করেন তিনি। তিনে নেমে বিরাট কোহলি করেন ১৩ বলে ১৯ রান। মিচেল স্টার্কের শিকার হন তিনি। চারে নেমে সূর্যকুমার যাদব ফের বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি ও ধারাবাহিকতা সমার্থক। ৩৩ বলে মারকুটে ৫০ রানের ইনিংস খেলেলন বিশ্বের দু’নম্বর টি-২০ ব্যাটার। পাঁচে নামা হার্দিক পাণ্ডিয়া মাত্র ২ রান করে ফেরন ডাগআউটে। ফিনিশারের ভূমিকায় উত্তীর্ণ দীনেশ কার্তিকের ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ২০ রান। ভারত নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান তোলে। যা লড়াইয়ের জন্য মন্দ নয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কেন রিচার্ডসন তুলে নেন চার উইকেট।

ভারতের রান তাড়া করতে নেমেছিলেন মিচেল মার্শ ও ফিঞ্চ। ৫.৪ ওভারে প্রথম উইকেটে তাঁরা তুলে ফেলেন ৬৪ রান। ১৮ বলে ৩৫ করে ভুবনেশ্বর কুমারের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে যান মার্শ। এরপর তিনে নেমে স্টিভ স্মিথ ১২ বলে ১১ রান করে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে বোল্ড হয়ে যান। ১১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ৯৭। চারে নেমে ম্যাক্সওয়েল ১৬ বলে ২৩ রান করে আউট হয়ে যান। অস্ট্রেলিয়া যখন ভেঙে পড়ছিল তখন ফিঞ্চ একটা দিক ধরে রেখেছিলেন। তিনি লড়াই জারি রেখেছিলেন ১৮.১ ওভার পর্যন্ত। ফিঞ্চের ব্যাটেই কার্যত অজিদের জয় লেখা হয়ে গিয়েছিল। ৫৪ বলে ৭৬ রান করে ফিঞ্চকে থামতে হয় তরুণ পেসার হর্ষল প্যাটেলের বলে। ফিঞ্চ বোল্ড হয়ে যান। কিন্তু তিনি ফেরার পর অস্ট্রেলিয়াকে কফিন বন্দি করার কাজটা শামি একাই করে ফেলেন। এর আগে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জোড়া প্রস্তুতি ম্য়াচ খেলে ফেলেছে ভারত। এদিন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেললেন রোহিতরা। এরপর ১৯ অক্টোবর অর্থাৎ আগামী বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত অন্তিম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। তারপরেই মহারণ। আগামী রবিবার অর্থাৎ ২৩ অক্টোবর, চিরপ্রতিদ্বন্দী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মেলবোর্নের বাইশ গজে মুখোমুখি টিম ইন্ডিয়া। কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে রোহিত শর্মা বনাম বাবর আজম ডুয়েল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 15 =