৬৪টি কার্তিকের পুজো দেবনাথ পরিবারে

নিজস্ব প্রতিবেদন, পূর্ব বর্ধমান: প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত আছে, গৃহস্থের বাড়িতে নবদম্পতি কার্তিক পুজো করলেই নাকি পুত্রসন্তান লাভ হয়!
২০২৩ সালে বিজ্ঞানীরা যখন চাঁদে মানুষের বসবাসের পরিকল্পনা নিয়ে চন্দ্রযান পাঠিয়ে গবেষণা শুরু করে দিয়েছেন, সেই সময়ও পূর্ব বর্ধমানের কাঞ্চননগরের বেলপুকুর এলাকার দেবনাথ পরিবারে দেখা গেল অদ্ভুত এক ঘটনা। একটা দুটো নয়, রীতিমতো ৬৪টি কার্তিকের সাড়ম্বরে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে মহা ধুমধামে। পাশাপশি শুক্রবার রাতে এলাকার মানুষদের নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন দেবনাথ পরিবারের সদস্যরা।
কথিত আছে, বাড়িতে যে দম্পতি নিষ্ঠার সঙ্গে কার্তিক পুজো করেন, তাদের নাকি পুত্রসন্তান লাভ হয়। তবে নতুন দম্পতির বাড়িতে চোরা কার্তিক অর্থাৎ রাতের অন্ধকারে কেউ মজা করে ল্যাংটো কার্তিকের মূর্তি রেখে আসে। আর সকাল হলেই বাড়ির সদস্যরা দেখতে পেয়ে ঘরে তুলে তাকে নিষ্ঠার সঙ্গে ভক্তিভরে পুজো করেন। অনেকেই ইচ্ছা করে আবার অনেকে মজার ছলে কার্তিক পুজোর আগের রাতে এই ল্যাংটো কার্তিকের মূর্তি বাড়ির দুয়োরে রেখে আসেন।
দীর্ঘদিন ধরে এমনই ঘটনা সামনে এলেও, পূর্ব বর্ধমানের কাঞ্চননগরের একসঙ্গে ৬৪টি কার্তিকের পুজো খবর চাউর হতেই গোটা এলাকায় আলোড়ন পড়ে যায়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল মাসে বিয়ে হয়েছে দেবনাথ পরিবারের ছেলে অমিত দেবনাথের ছেলের। অমিতবাবু পেশায় বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তাই তাকে বাড়ির বাইরেই থাকতে হয়। বিয়ের পর প্রথম কার্তিক পুজো। তাই পাড়ার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সহ অফিসের কলিগরাও কার্তিক পুজোর অপেক্ষায় ওত পেতে বসেছিলেন।
অমিত দেবনাথ জানিয়েছেন, কার্তিক পুজোর আগের রাতে পরিবারের সকলেই একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে দেখেন এক এক করে প্রায় অনেকেই বাড়ির বারান্দায় প্রায় ১০টির মতো কার্তিকের মূর্তি রেখে গিয়েছে। তাঁরা সেগুলি তুলে রেখে রাতে যে যার ঘরে শুয়ে পড়েন। তবে ঘরে শুয়ে শুয়ে তিনি দেখতে পান তাঁর অফিসের কলিগরা এক পেটি ভর্তি কার্তিকের মূর্তি বাড়ির ভিতরে রেখে দিয়ে গিয়েছেন। বাড়ির দরজার কলিং বেল বাজিয়ে দরজা খোলার আগেই সকলে পালিয়ে যান।
সকালে শুরু হয় আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ। মহা ধুমধামে পুজোর শুরু হয়। সদ্য বিয়ে হয়ে এসেছেন অমিতবাবুর স্ত্রী শিল্পী দেবনাথ। শিল্পী দেবনাথ জানান, এত কার্তিক কখনো একসঙ্গে পুজো হতে তিনি দেখেননি। পুজো উপলক্ষে পরিবারের সঙ্গে সকল আত্নীয়দের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − sixteen =