পাকিস্তানে জঙ্গিদের হাতে অপহৃত ৬ ফুটবলার!

বালুচিস্তানের দেরা বুগতির সুই শহরে টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিল একটি ফুটবল টিম। অধিকাংশেরই বয়স ১৭ থেকে ২০। তাদের আর মাঠে নামা হয়নি। একদল জঙ্গি অপহরণ করেছেন তাদের। পাকিস্তানের এই ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। খবরে যতটুকু জানা যাচ্ছে, পুরো টিম নয়, ছয় ফুটবলারকে অপহরণ করা হয়েছে। সোমবার ওই ছয় ফুটবলারকে উদ্ধার করার জন্য সার্চ শুরু করেছে পাকিস্তানের সিকিউরিটি ফোর্স। খেলার উপর জঙ্গি হামলা নতুন নয় পাকিস্তানে। এক দশকেরও বেশি সময় আগে পাকিস্তানে সফরকারী শ্রীলঙ্কা টিমের উপর জঙ্গিরা গুলি চালিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মহলে যা নিয়ে মুখ পুড়েছিল পাক সরকারের। এ বারের ঘটনাও কম নিন্দনীয় নয়। সুই দেরা বুগতির মফঃস্বল শহর। গত শনিবার সেখানেই একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিল একটি টিম। ওখানে পৌঁছনোর পরই অপহরণ করা হয়েছে ছয় ফুটবলারকে। আমির হুসেইন নামে ২০ বছরের এক অপহৃত ফুটবলারের বাবা জাকির হুসেইন বলেছেন, ‘ফুটবল খেলা তো অপরাধ নয়। আমার ছেলে ফুটবলার হিসেবে বেশ ভালো। তাই বলে ওকে অপহরণ করা হবে? এটা মেনে নিতে পারছি না কোনও ভাবেই। আমরা পুরো পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। আমিরকে অপহরণ করার পর থেকে জঙ্গিদের তরফে কোনও যোগাযোগও করা হয়নি।’ জঙ্গিরা বালুচ রিপাবলিক আর্মির লোক বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার পাকিস্তানের সব মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সমালোচনাও চলছে সরকারের। যে কারণে তড়িঘড়ি উদ্ধারকার্যে নেমেছে পাকিস্তানের সিকিউরিটি ফোর্স। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি বলেছেন, ‘পুরো এলাকা দখলে নেওয়া হয়েছে। ছয় বাচ্চাকে যে অপহরণ করা হয়েছে, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জঙ্গিদের হাত থেকে ওদের উদ্ধার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ পাক মন্ত্রী যাই বলুন না কেন, এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানের মিলিটারি ফোর্স কিছুই করতে পারেনি। ১৬ জনের টিম সুইয়ে খেলতে যাচ্ছিল। বন্দুক দেখিয়ে তাদের বাস দাঁড় করানো হয়। তার পর ছয় ফুটবলারকে তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। যত দূর জানা যাচ্ছে, ওই অপহৃত ফুটবলাররা অধিকাংশই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্যদের পরিবারের লোক। সেই কারণেই তাদের অপহরণ করা হয়েছে। বালুচিস্তান দেশের সবচেয়ে জনবহুল ও প্রাকৃতিক সম্পদশালী অঞ্চল। তা সত্ত্বেও এখানকার লোকজন যাবতীয় আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। যে কারণে এই অঞ্চলে প্রায়ই প্রতিবাদ দেখা যায়। তেমনই একঝাঁক জঙ্গির এই কাণ্ডে কিন্তু মুখ পুড়েছে পাক সরকারের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + one =