নিজস্ব প্রতিবেদন, বর্ধমান: টানা ৪৮ ঘণ্টা তল্লাশির পর শুক্রবার বারোটার সময় ভাতারের নর্জার কাগজ মিল থেকে বের হলেন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা। বুধবার দুপুর নাগাদ ভাতারের নর্জায় কাগজকলে এসে ঢোকেন আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, ছ’-সাতটি গাড়িতে চড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা সহ তাঁরা কাগজকলে ঢোকেন। এদিন শুক্রবার দুপুরে দেখা যায় আয়কর বিভাগের দলটি কারখানার ভিতর থেকে বেরিয়ে গেলেন। যদিও আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা তদন্তের বিষয়ে কোনও মুখ খোলেননি। কারখানার আধিকারিকরা দাবি করেন, ‘আয়কর দপ্তর যা জানতে চেয়েছে তাদেরকে আমরা সাহায্য করেছি।’ সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার নর্জা গ্রামের কাছে রয়েছে এই কাগজকল। নর্জা গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার অতি পরিচিত খড়ি নদী। এই নদীর দু’পাশে প্রায় দু’-আড়াইশো বিঘা জমির ওপর তৈরি হয় কাগজকল কারখানাটি। এমনিতেই কাগজকল শিল্পের বিরূপ প্রভাব হল দূষণ। কারখানা চালুর পর খড়ি নদীর জলদূষণ তথা আশপাশের এলাকায় দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ একাধিকবার উঠেছিল। যদিও কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছে, তারা কারখানায় উৎপন্ন দূষিত জল পরিশ্রুত করেই খড়ি নদীতে ফেলে।
এই সংস্থার হেড অফিস কলকাতার সল্টলেক বলে জানা যায়। অবাঙালি ওই মালিকের রাজ্যে একাধিক কারখানাও রয়েছে। সংস্থার একাধিক ডাইরেক্টর রয়েছেন। এই সংস্থার একাধিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আয়কর বিভাগ হানা দেয় বলে জানা গিয়েছে। তবে আয়কর বিভাগ কারখানায় ঢোকার পর থেকেই কারখানার ভিতরে কোনও গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কারখানার ম্যানেজার সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বিনা অনুমতিতে বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বাইরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে মালভর্তি ট্রাক। বুধবার দুপুর থেকেই তারা অপেক্ষা করছে। কিন্তু তাদের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি নেই। আয়কর বিভাগের অভিযান শেষ হওয়ার অপেক্ষায় তাঁরা। তাই বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে রাস্তার একধারে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন চালকরা। তবে এলাকার মানুষদের এ বিষয়ে কৌতূহল ছিল চোখে পড়ার মতো।