অভিষেকের কনভয়ের ঘটনায় একাধিক ধারায় মামলা রুজু রাজ্য পুলিশের, আটক ৪

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল পুলিশ। ঘটনায় ইতিমধ্যেই চারজনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপারের কাছে ওই ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে নবান্নের তরফে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ ঝাড়গ্রাম থানায় মামলা দায়ের করে। শনিবার মোট চারজনকে পুলিশ আটক করেছে । তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের নাম জানানো হয়নি।
শুক্রবার রাতে গড় শালবনিতে ঢোকার সময় তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। ভাঙচুর হয় মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতেও। এই ঘটনায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে শাসক দল। ওই ঘটনার পর অভিষেক রাতে গোপীবল্লভপুরের অধিবেশন থেকে কড়া বার্তাও দিতে দেখা যায় তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিজেপিকে নিশানা করে এই ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়মি সমাজের পক্ষ থেকে বিবৃতি দাবি করেন। একইসঙ্গে এও বলেন, ‘আপনারা যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিবৃতি না দেন, তাহলে ধরে নেব এই ঘটনা কুড়মি সমাজ ঘটিয়েছে। আপনি আন্দোলন করছেন পাটকেল মেরে! তাহলে সিপিএমের হার্মাদ আর বিজেপির জহ্লাদদের সঙ্গে আপনাদের পার্থক্য কোথায়? আমি বিশ্বাস করি এই ঘটনার মধ্যে কুড়মি সমাজ নেই। তাদের মুখোশধারী কোনও রাজনৈতিক দল রয়েছে। এই বিক্ষোভের পিছনে কারা আছে, তা না জানালে প্রশাসন কড়া হাতে ব্যবস্থা নেবে।’ এরপরই বঙ্গ বিজেপিকে বিদ্ধ করে তাঁর প্রশ্ন, ‘এটা কি জহ্লাদদের উল্লাসমঞ্চ? আদিবাসী কুড়মি সমাজ বলে যদি তাঁরা নিজেদের দাবি করেন। তবে তাঁদের মুখে জয় শ্রীরামের স্লোগান কেন? যদি কেউ ভাবে আদিবাসী কুড়মিদের পতাকা নিয়ে বিজেপির ক্ষোভ তৃণমূলের বিরুদ্ধে উগরে দেব, আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ‌্যায়কে ভয় দেখাব, তাদের বলব আমি ময়দানে আছি। কোন নেতার মদত রয়েছে সেই তথ্য আমি নিয়েছি। একজনকেও রেয়াত করা হবে না। আগামীদিনে এই বিজেপির আবর্জনাকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার দায়িত্ব আমার।’ এরই পাশাপাশি কুড়মিদের উদ্দেশে একইসঙ্গে বলেন, ‘আপনারা তফশিলি উপজাতি মর্যাদা চাইছেন, আর একজন তফশিলি উপজাতির মহিলা মন্ত্রীর উপরই হামলা করছেন।’
এরপরই শুক্রবারের সন্ধেয় এই ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মামলা রুজু করা হয় রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে। সেখানে মন্ত্রীর গাড়িতে ভাঙচুর হওয়ার জেরে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে পিডিপিপি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। একইসঙ্গে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে, যা জামিন অযোগ্য। অন্যদিকে, অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মন্ত্রী বীরবাহার তরফ থেকেও। এই অভিযোগে গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি বীরবাহার গাড়ির চালককেও মারধর করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন ওই ঘটনায় আহত হওয়ার ঘটনাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − four =