করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জেনারেল বগি সহ ৪ বগির ক্ষতি সর্বাধিক, ক্ষতি হয়েছে হামসফরের ২ বগিরও

শুক্রবার সন্ধেয় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে রয়েছে এখনও ধোঁয়াশা। কারণ খতিয়ে দেখছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। তদন্ত করছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটিও। এদিকে সূত্রে খবর, হামসফর এক্সপ্রেসের ২ টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত করমণ্ডলের ২০টি বগিও। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এস-১, এস-২, এস-৩ এবং এস-৫। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেনারেল কম্পার্টমেন্ট। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ২৬১ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে ১৮৯ জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। ৭২ জনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এই প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, ‘শুক্রবার রাত থেকে এক নাগাড়ে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, রেলপুলিশ, রাজ্য সরকার সবাই মিলে উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে। বালেশ্বর, ভুবনেশ্বর, টাটানগর থেকে উদ্ধারকারীরা এসেছেন। এত বড় দুর্ঘটনায় উদ্ধারকার্যে চেষ্টার কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না।’ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, উদ্ধারকার্য শেষ হওয়ার পর কম্পার্টমেন্টগুলোকে এবার ক্রেনের মাধ্যমে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে উঠে আসছে একাধিক তথ্য। বিশেষ সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথমে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে আসছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনে হঠাৎ কোনওভাবে দুঘর্টনা ঘটে এবং পাশের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে ২১টি বগি লাইনচ্য়ুত হয়ে যায়। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের তিনটি বগি ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে। সেই সময়ই ওই লাইন দিয়ে আসছিল ডাউন যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস, যা হামসফর এক্সপ্রেস নামেও পরিচিত। লাইনের উপরে পড়ে থাকা কামরা গুলির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের। সংঘর্ষের জেরে হামসফর এক্সপ্রেসের দুটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যায়।
এছাড়াও সামনে আসছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চাকার ব্যবহার। রেলের ইঞ্জিনিয়াররা দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক্সপ্রেসের চাকা পরিদর্শন করে যান। চাকা কী ব্যবহারের অনুপযুক্ত ছিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে সাঁতরাগাছি থেকে বালেশ্বর পৌঁছান দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা। কীভাবে দুর্ঘটনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, সিগন্যালিংয়ে ত্রুটি, না অন্য কোনও কারণ তা খতিয়ে দেখবেন রেল আধিকারিকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − four =