মিলেনিয়াম পার্কের কাজ চলে যাওয়া ৩৯ ঠিকা শ্রমিকের কাজ মিলল নয়া এজেন্সিতে

মিলেনিয়াম পার্কে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেও হঠাৎ-ই তাঁদের ভবিষ্যত নিয়ে অন্ধকারে পড়েন মোট ৩৯ জন ঠিকা শ্রমিক। এদের মধ্যে কেউ ছিলেন মালি, কেউ বা সাফাই কর্মী, আবার কারও দায়িত্ব ছিল নিরাপত্তারক্ষার। তবে এবার তাঁরা ফের আলোর দিশা পেলেন। প্রসঙ্গত, গত বছর ২৩ ডিসেম্বর মিলেনিয়াম পার্ক কেএমডিএ-র থেকে কলকাতা পুরসভার কাছে হস্তান্তরিত করা হয়। এরপরই সমস্যায় পড়েন পার্কের শ্রমিকরা। কারণ, কেএমডিএ পার্ক হস্তান্তর করার সঙ্গে সঙ্গেই পার্কে দীর্ঘদিন কর্মরত শ্রমিকদের দায়দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে নিজের ঘাড় থেকে। অন্যদিকে, কলকাতা পুরসভা পার্কের দায়িত্ব নিলেও পার্কের কর্মীদের দায়িত্ব নেয় না। স্বভাবতই ২৩ ডিসেম্বর থেকে বেকার হয়ে পড়েন এই ঠিকা শ্রমিকরা, এমনটাই অভিযোগ সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর এর পরেই আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা।শ্রমিকদের নেতৃত্ব দাবি করে পার্কের মালিকানা হস্তান্তরিত হলেও শ্রমিকদের ছাঁটাই করা চলবে না। পাশাপাশি এ দাবিও তোলা হয়, পুরসভাকেই শ্রমিকদের নিয়োগ করতে হবে। এই দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় ২০২২-এর ডিসেম্বর থেকে। আর এই নেতৃত্ব দেয় সিটু অনুমোদিত ‘কলকাতা কন্ট্রাক্টর্স ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’। সংগঠনের তরফে কলকাতা পুরসভা ও কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার তাঁদের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মেয়র পারিষদ (উদ্যান) এবং মিউনিসিপাল কমিশনারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। এরপর গত ২০ মার্চ কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনের সময় ঠিকা শ্রমিকদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে করা হয় সংগঠনের তরফে। সেখানেও মিলেনিয়াম পার্কের কাজ হারানো শ্রমিকদের দাবিও তোলা হয়। এরপরই ৩০ ও ৩১ মে পার্কের এই ৩৯ জন ঠিকা শ্রমিককে নতুন এজেন্সির অধীনে নিয়োগ করা হল। সংগঠনের নেতা সৌম্যজিৎ রজক এই প্রসঙ্গে জানান, ‘এক বছরের মধ্যে আমাদের ইউনিয়নের নেতৃত্বে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রামে জিতলাম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকা শ্রমিকদের ২১ মাসের বকেয়া মজুরি আদায় এবং তারপর মিলেনিয়াম পার্কের ঠিকা শ্রমিকদের রুটিরুজি রক্ষা। এই দুটি সাফল্য অন্যান্য ক্ষেত্রের ঠিকা শ্রমিকদেরও ইউনিয়নবদ্ধ হতে এবং আন্দোলন করতে অনুপ্রাণিত করবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে স্থায়ী কর্মচারিদের সংগঠন এবং কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে স্থায়ী শ্রমিকদের ইউনিয়ন নেতৃত্ব যেভাবে ঠিকা শ্রমিকদের লড়াইকে প্রতি পদে সাহায্য করেছেন সেটাও অন্যত্র অনুকরণযোগ্য। এই সংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে ভবিষ্যতের বহু রসদ সংগ্রহ করার আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − five =