নীতি পুলিশের হেপাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে পথে নেমে ইরানে নিহত ৩১ জন। হিজাব না পরার কারণে এক তরুণীকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল ইরানে (Iran)। সেই ঘটনার প্রতিবাদে হাজার হাজার মহিলা ইরানের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ইরানের পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ইতিমধ্যেই ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যেন ইরানের প্রতিবাদের খবর বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছতে না পারে। প্রতিবাদীরা যেন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বার্তা দিতে না পারে, সেই কারণে হোয়টসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে অসলোর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
ইরানের মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান মাহমুদ আমিরি-মোঘাদ্দাম বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের দাবিতে পথে নেমেছিলেন ইরানের নাগরিকেরা। সরকার শান্তিপূর্ণ সেই প্রতিবাদের জবাবে বুলেট ছুড়েছে।’ ইরান সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে গত চারদিন ধরে লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সেদেশের মানুষ। বিশেষত, সরকারের বিরোধিতা করে পথে নেমেছেন বিপুল সংখ্যক মহিলারা। ইরানের (Iran Hijab Protest) জাতীয় মিডিয়ার তরফে বলা হয়েছে, দেশের মোট ১৩টি শহরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, প্রতিবাদীদের দিকে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে পুলিশ। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টির তরফে জানানো হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের লাঠি দিয়ে মারা হচ্ছে।
তবে ইরানের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু বিদেশি রাষ্ট্রের মদতেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সেদেশের জাতীয় মিডিয়ার তরফেই জানানো হয়েছে, ন’জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে বেসরকারি সূত্র মতে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শুধুমাত্র হিজাব পরাই নয়, তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিষয় যোগ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। তার মধ্যে রয়েছে লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের মতো বিষয়। দুর্নীতিগ্রস্ত শাসকের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে সামিল হয়েছে আমজনতা।
ইরানের মানবাধিকার সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের ৩০টি শহর এবং গ্রামে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। দমন করতে প্রতিবাদী এবং মানবাধিকার কর্মীদের গণ-গ্রেপ্তার করছে ইরান পুলিশ। মানবাধিকার সংগঠন জানিয়েছে, প্রতিবাদে নেমে সে দেশের উত্তরে আমোল শহরে বুধবার মারা গিয়েছেন ১১ জন। ওই মাজানদারান প্রদেশের বাবোল শহরে বুধবার মারা গিয়েছেন ছ’জন। এর আগে কুর্দিস্তানের একটি মানবাধিকার সংগঠন জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে ওই প্রদেশে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জন প্রতিবাদীর। বুধবার রাতে মারা গিয়েছেন আট জন।