প্রাপ্তি আছে, কতটা, প্রশ্ন তো অনেকেই করেন। ইদানিংকালে বাংলা থেকে ভারতীয় টিমে খেলা ক্রিকেটারের সংখ্যা কিছু কম নয়। মহম্মদ সামি থেকে শুরু করে মুকেশ কুমার, আকাশ দীপরা খেলছেন, সাফল্যও পাচ্ছেন। তাতে বাংলার প্রাপ্তি কোথায়? কতদিন আর ‘দত্তক পুত্রে’ রক্ষা পাবে সাম্রাজ্য? এই প্রশ্নের বোধ হয় উত্তর এ বার মিলছে! আর সেই প্রাপ্তির ঘরে নায়ক হয়ে উঠছেন চেতলার এক ছেলে। বাংলার হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স এতদিন অনেকেই দেখেছেন। এ বার দেশের হয়েও আগুন জ্বালাচ্ছেন তিনি। বল নতুন হোক আর পুরনো, সুইং কিংবা ইয়র্কার, লা-জবাব বোলিং করছেন যুধাজিৎ গুহ। ১৮ বছরের যুধাজিৎকে নিয়ে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, এ ছেলে টেস্ট মেটিরিয়াল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ঋদ্ধিমান সাহার পর নিখাদ এক বঙ্গসন্তান আবার টেস্ট টিমে জায়গা পাবেন? যুধাজিতে আস্থা রাখতেই হচ্ছে।
যুধাজিতের উত্তরণের প্রক্রিয়া গত তিন বছর ধরেই চলছে। মরসুমে বাংলার হয়ে খেলা। মরসুম শেষ হলেই জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে চলে যাওয়া। চলতি বছরের শুরুতেই যখন ধারাবাহিকভাবে শিবিরে থাকছিলেন, সেই সময় থেকেই বলা হচ্ছিল বোর্ড অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের দল এখন থেকেই সাজাতে শুরু করেছে। এই দলে নতুন বলে ভরসার মুখ বাংলার যুধাজিতই। ১৮ বছরের ছেলে লাল বলে অনেক বেশি সফল। সাদা বলের টুর্নামেন্ট খুব বেশি না খেলায় চিন্তা হয়তো ছিল তাঁর। আর তাই দিনের পর দিন নেটে নিংড়ে দিয়েছেন নিজেকে। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে সেই ফসলই তুলছেন যুধাজিৎ।
পাকিস্তানের কাছে হারের পর চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারতের ছোটরা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য দরকার ছিল টিম গেম। জাপানের বিরুদ্ধে তা-ই তুলে ধরেছিল মহম্মদ আমনের টিম। ওই ম্যাচে ৭ ওভার বল করে ৩টি মেডেন নিয়েছিলেন যুধাজিৎ। খরচ করেছিলেন মাত্র ৯ রান। আর ঝুলিতে ছিল ১টি উইকেট। আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে যুধাজিৎ আরও আগ্রাসী। ৭ ওভার বল করে খরচ করেছেন মাত্র ১৫ রান। আর নিয়েছেন ৩টে উইকেট। নতুন ও পুরনো বলে তিনি যে একই রকম সাফল্য পান, তারই ছাপ রেখেছেন আমিরশাহি ম্যাচে। নতুন বলে প্রতিপক্ষ ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন, পুরনো বলে মোক্ষম ইয়র্কার ও আউট সুইয়ে তুলেছেন ২টো উইকেট। যুধাজিতের প্রথম ওভারে ক্যাচ পড়েছিল, না হলে উইকেট আরও বাড়ত। নতুন বলা হচ্ছে, যুধাজিতের উপর নজর রয়েছে বোর্ডের। যত ধারাল হবেন, যত সাফল্য পাবেন, ততই সিনিয়র টিমের দিকে এগিয়ে যাবেন বাংলার পেস বোলার।