কলকাতা: ডিসেম্বরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন-সহ একাধিক দাবিতে অনশন আন্দোলন শুরু করেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারির পড়ুয়ারা। টানা দু’দিনের অনশনে অসুস্থ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অনশনরত তিন পড়ুয়া। খাওয়া বন্ধ, অন্য দিকে, ক্রমাগত রক্তচাপ ওঠানামা করছে ওই পড়ুয়াদের। তবে সবসময় তাঁদের দেখভালের জন্য তৈরি রয়েছেন অধ্যাপক চিকিৎসকরা। এদিকে পড়ুয়ারাও নিজ সিদ্ধান্তে অনড়। এই পরিস্থিতিতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। তিনি কথা বলেন, অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি অনশনকারীদের আন্দোলন তুলে নিতে অনুরোধ জানান। তাতে অবশ্য সাড়া দেননি পড়ুয়ারা।
শনিবার রাতের খবর, অনশনরত দুই ছাত্রের অবস্থার অবনতি হয় বলে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে হাসপাতাল চত্বর পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছে। আন্দোলনরত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের আশঙ্কা, পুলিশ দিয়ে জোর করে অনশন ভাঙার ছক করছে কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের হুমকি, জোর করে আন্দোলন ভাঙা হলে তার পরিণতির দায় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
এদিকে শনিবার সকালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করলে গিয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি অঞ্জন অধিকারী। অনশন প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তোরা আমাদের ছেলের মতো। এবার আন্দোলনটা তুলে নে।’ কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। উলটে বোঝাতে গেলে অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় আন্দোলনকারীদের।
বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা থেকে শুরু হয়েছিল, আজ অর্থাৎ শনিবার সকাল বারোটায় ৪৯ ঘণ্টায় পড়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদের অনশন। অধ্যক্ষর কাছে তাদের দাবি পূর্ব ঘোষিত ২২ ডিসেম্বরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করতে হবে। নিজেদের দাবি সাধারণ রোগীর কাছে তুলে ধরতে লিফলেট বিলি শুরু করেছে পড়ুয়ারা। যাতে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা না যায়।
আন্দোলকারীদের সমব্যথী, তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও ভোটের দাবি মানছে না মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যেক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, তনির্বাচন ঘোষণা করার ক্ষমতা আমার হাতে নেই। সম্পূর্ণ বিষয়টাই স্বাস্থ্যরভবনের নিয়ন্ত্রণাধীন। তবে ছাত্রদের প্রতি তাঁর আশ্বাস, ওই তারিখে না হলেও নির্বাচন হবে। অনশন থেকে সড়ে এসো।’
উল্লেখ্য , ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সোমবার দুপুর থেকে ঘেরাও করা হয়েছিল অধ্য ক্ষ-সহ একাধিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের। মঙ্গলবার সমস্যা আরও বাড়ে মেডিক্যা ল কলেজের সেন্ট্রাল ল্যা বরেটরি বন্ধ থাকায়। এখানেই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচারের আগে রক্ত পরীক্ষা হয়। সে বিভাগ বন্ধ থাকায় ফাঁপড়ে পড়েন একাধিক রোগীর পরিবার।
এছাড়াও ঘেরাও চলাকালীন শিক্ষক-চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সেটাও খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।