দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের চিংড়িপোতায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ গেল ৩ জনের

পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে গেল প্রাণ। বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বজবজের চিংড়িপোতা গ্রামে। রবিবার সন্ধ্যায় সেখানকার একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে ঝলসে মৃত্যু হয় তিন জনের। এক জন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই বিস্ফোরণের ঘটনার পরই পুলিশি তৎপরতা শুরু হয় ওই গ্রামে। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর বাজি ও বাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করেছে। এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর পুরুষরা এলাকা ছাড়া। এলাকার মহিলাদের বক্তব্য, ওই গ্রামে কমবেশি অধিকাংশ বাড়িতেই বাজি তৈরি করা হয়। অধিকাংশ জনেরই লাইসেন্স নেই। আর এই ঘটনা যে পুলিশের অজানা তাও নয়। সব জানে পুলিশ প্রশাসন। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরণের ঘটনা দেখানোর জন্যই পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের ওপর আরও অভিযোগ যে, গোটা ঘটনা ভুল ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। সেই কারণে সোমবার সকাল থেকেই গ্রামে ঢোকার রাস্তা অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঢোকার রাস্তা থেকে সংবাদমাধ্যমের গাড়িও ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
রবিবার সন্ধ্যায় বেআইনি বাজির কারখানায় বিস্ফোরণের পর থেকেই থমথমে বজবজের চিংড়িপোতা গ্রাম। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের অ্যাডিশনাল এসপি অর্ক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাজি বাজেয়াপ্ত করার অভিযান চলছে। তুবড়ি, চকলেট, চরকা, রকেট, সেল, তারাবাতি, রংমশাল সহ প্রচুর মশলা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রামের মহিলাদের বক্তব্য, ওই গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতেই বাজি তৈরি হয় এবং অধিকাংশ জনেরই লাইসেন্স নেই। পুলিশ এ সব জানে বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বজবজের চিংড়িপোতা নন্দরামপুর যে গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানকার মানুষের রোজগারের মূল উৎস এই বাজি-ই। এলাকার লোকজন জানান, ভরসন্ধ্যায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২জনের। মা মেয়ে তারা। ৩৫ বছরের মহিলা ও তাঁর ১৩ বছরের মেয়ে। এদিকে একজনকে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সূত্র মারফত খবর, এই বাজি কারখানা একেবারে বেআইনি। তবে রবিবারের ঘটনার পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন রকম ভাবে খবর দেখানো হয়েছে। এই গ্রাম এবং গ্রামবাসীদেরকেও সেখানে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর তার ফলেই রাতভর অতি সক্রিয় ভূমিকা নেয় পুলিশ। গোটা গ্রামজুড়ে তল্লাশি অভিযান হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 2 =