সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, এনআরএস-এর পর এবার এসএসকেএম-এর মতো সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও দালালচক্রের পর্দাফাঁস। পুলিশের জালে ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে তিন দালাল। গত শনিবার থেকেই কলকাতার প্রথম সারির হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা অভিযান চালান। এরপরই মধ্য কলকাতার নীলরতম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে দু’জন দালালকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, এসএসকেএম থেকে ধৃত ৩ জনই রোগীর পরিজনদের বেড পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিতেন। সেক্ষেত্রে রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন তাঁরা। টাকা না থাকলে কিছু জিনিস গচ্ছিত রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হত।
প্রসঙ্গত, হাসপাতালে দালালরাজের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও এই ধরনের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এবার এই নিয়ে সরব শাসকদলেরই বিধায়ক। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। দালালদের খপ্পরে পড়ে সঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধ রোগীর। ওই বৃদ্ধের ছেলে রাতেই কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান। ফোন পেয়ে রাতেই হাসপাতালে পৌঁছেও যান স্থানীয় বিধায়ক মদন মিত্র। হাসপাতালে দাঁড়িয়েই মদন মিত্র রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে বার্তা দেন, ‘এরকম আর কোনও দালালকে ধরা মাত্রই তাঁদের মারবেন না, ধরবেন না, পুলিশে দেওয়ার আগে একবার আমাদের হাতে তুলে দিন।’ শাসক দলের বিধায়ক সোচ্চার হওয়া মাত্রই সক্রিয় পুলিশ। এরপরই বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে অভিযান শুরু হয় কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার তরফ থেকে।
এদিকে বিধায়ক মদন মিত্রের হুঁশিয়ারির পর এবার অভিযুক্তদের ছবি দিয়ে পোস্টার পড়ল হাসপাতাল জুড়ে। দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় হয়েছে। সোমবারই নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ। দালাল চক্রে অভিযুক্তদের ছবি-সহ পোস্টার পড়ে সাগর দত্ত হাসপাতালে। রোগীর পরিবারের সদস্যদের সচেতন করতেই এই উদ্যোগ বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।