ভাল খেলেও ক্রোয়েশিয়ার কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতেই হয়েছে ব্রাজিলকে। সঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে নেইমারের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন। খেলা যে যতই ফভাল খেলে থাকুন না কেন, শেষ পর্যন্ত মানুষ মনে রাখে ফলই। আজ থেকে কয়েক বছর বাদেও কারও মনে থাকবে না ব্রাজিল-ক্রোযেশিয়া খেলায় একাধিপত্য দেখিয়েছিল ব্রাজিলই। চলতি বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে এক্সট্রা টাইম পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়া এবং ব্রাজিল ১-১ গোলে ড্র করেছিল। এরপর পেনাল্টি শ্যুটআউটে ক্রোয়েশিয়া ৪-২ গোলে ব্রাজিলকে পরাস্ত করে। এই পরাজয় মানতে পারেননি নেইমার। খেলার পর কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল নেইমারকে। তবে সময়ের নিরিখে এই ম্যাচ আপাতত ইতিহাস। আজ রাতে এই ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্তিনা। ক্রোয়েশিয়া শিবিরের অবশ্য ধারনা, ব্রাজিলের ফলের রিপ্লে তাঁরা দেখাবেন আর্জন্তিনা ম্যাচেও। অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত জয় আসবে তাঁদেরই ঘরে। এখানে ভুলে গেলে চলবে না, ২০১৮ বিশ্বকাপে এই ক্রোয়েশিয়াই কিন্তু রানার্স আপ হয়েছিল। ফলে কোনওভাবেই হাল্কাভাবে তাঁদের যে নেওয়া যায় তা কিন্তু নয়। ফলে মঙ্গলবার রাতে আর্জেন্তিনাকে আরও এক কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হবে।
এদিকে গত ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখানোয় একটু হলেও সমস্যায় আর্জেন্তিনা। তবে আর্জেন্তিনা দলের প্রতিটি খেলোয়াড় থেকে শুকরু করে আর্জেন্তেনীয়বাসীও চাইছেন এবারের বিশ্বকাপ শোভা পাক লিওনেল মেসির হাতে। কারণ,এই মুহূর্তের নিরিখে মেসির জনপ্রিয়তা কোনও প্রশ্ন থাকতে পারে না। শুধু আর্জেন্তেনীয়বাসীর মধ্যেই তিনি যে জনপ্রিয় তা নয়, তাঁর খেলার কুশলতা মন ছুঁয়েছে বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের বিরাট এক অংশের। এদিকে সম্ভবত এটাই তাঁর কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। ফলে মেসিও চাইছেন এবার যেন খেতাবটা আসুক আর্জেন্তিনার ঘরেই।
এদিকে রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে অন্তিম লড়াইয়ে হারতে হয় আর্জেন্তিনাকে। তখনই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন মাঠে ফেলে রেখে আসতে হয়েছিল মেসিদের। এবার তেমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য মরিয়া আর্জেন্তিনা। যে স্বপ্ন অধরা থেকে গেছে রাশিয়ার মাটিতে তা পূরণ করতে নিজেদের উজাড় করে দিতে প্রস্তুত কাতারের মাঠে। এদিকে আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন ক্রোয়েশিয়ানরাও। ডিফেন্ডার জসিপ জুরানোভিচ অবশ্য জানাচ্ছেন, তিনি মনে করেন তাঁদের কাউকে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। এরই রেশ টেনে তিনি এও জানান, ‘নিজেরা যে এই ম্যাচে সেরা পারফরম্যান্সটা করতে পারি, সেইদিকেই আমরা তাকিয়ে থাকব। দলের মধ্যে ঐক্য এবং সংহতিই আমাদের সাফল্যের আসল চাবিকাঠি। সত্যি কথা বলতে কী, আমরা সবসময়ই একটা পরিবারের মতো খেলি।’ অর্থাৎ, জুরানোভিচের কথায় এটাও হয়তো কোথাও লুকিয়ে রয়েছে যে, আর্জেন্তেনীয়রা কোথাও একটা বড্ড বেশি মেসি নির্ভর হয়ে পড়ছেন। যা তাঁরা নন। তবে জুরানোভিচ যাই বলুন না কেন, আর্জেন্তিনাকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত তোলার ক্ষেত্রে মেসির অবদান প্রশ্নাতীত। পাঁচ ম্যাচে চারটে গোল। সঙ্গে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে যে ডিফেন্স চেরা পাস পাঠিয়ে নাহুয়েল মোলিনাকে দিয়ে গোল করালেন তা ছিল নজর কাড়া। আর এই ম্যাজিক ফের দেখার জন্যই আজ রাত জাগবে কলকাতাবাসী।