মাইক্রোসফটের পথে হেঁটে এবার বিপুল পরিমাণ কর্মী ছাঁটাই করছে গুগল। শুক্রবার সরকারিভাবে গুগলের মালিক আলফাবেট ইন্কের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, মোট কর্মীর ৬ শতাংশ অর্থাৎ কমপক্ষে ১২ হাজার কর্মীর চাকরি যাচ্ছে।
তবে গুগল জানিয়েছে, কর্মীদের খালি হাতে বরখাস্ত করা হবে না। কমপক্ষে ৬০ দিন নোটিস পিরিয়ডে থাকাকালীন সম্পূর্ণ বেতন দেওয়া হবে তাঁদের। ২০২২ সালের বোনাস ও পাওনা ছুটিও পাবেন তাঁরা। এছাড়াও গুগলে যত বছর চাকরি করেছেন, সেই সময়কালের প্রতি বছরের হিসেবে দু’সপ্তাহের বেতন দেওয়া হবে। ছ’মাসের স্বাস্থ্যবিমা ও কর্মসংস্থানের পরিষেবাও দেবে কোম্পানি।
গুগল সিইও সুন্দর পিচাইও (Sundar Pichai) ই-মেল করে কর্মীদের দুঃসংবাদ দেন। একই সঙ্গে কর্মীদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি। বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা আনুমানিক ১২ হাজার কর্মী কমিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যেই মার্কিন মুলুকের কর্মীদের ই-মেল মারফৎ এই খবর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য দেশের কর্মীরাও শীঘ্রই ই-মেল পাবেন। সেখানকার নিয়মকানুন মেনে ই-মেল করা হবে বলে খানিকটা বেশি সময় লাগছে।’ এরপরই ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ‘এমন সিদ্ধান্তের জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। জানি এতে কর্মীদের উপর কী কঠিন চাপ পড়বে। আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সমস্ত দায় আমি মাথা পেতে নিচ্ছি।’
প্রযুক্তিক্ষেত্রের ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ (এআই)-এ বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমেই বাড়াচ্ছে প্রযুক্তি সংস্থাগুলি। এতেই টান পড়ছে ভাঁড়ারে। আবার, প্রযুক্তি দুনিয়ার পরিস্থিতি যা, তাতে এই মুহূর্তে এআই-এর পিছনে বিনিয়োগ কমানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না কোনও বহুজাতিকই। এ দিকে সংস্থার আয় বৃদ্ধির নতুন পথও বেরোচ্ছে না। স্বভাবতই কর্মী ছাঁটাই করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা চলছে। সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে টালমাটাল অর্থনীতির কারণে। অক্টোবরে দেখা গিয়েছিল, গত বছরের তুলনায় গুগলের মুনাফা কমে গিয়েছিল ২৭ শতাংশ। যা অর্থের হিসাবে ১,৩৪০ কোটি ডলার।