জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নাশকতার দায়ে অভিযুক্ত ১১ জনকে সন্দেহভাজন মাওবাদীকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ১৪ বছর আগের ঘটনায় কেন এখনও বিচার শেষ হয়নি, কেন সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা যায়নি, মঙ্গলবার সেই প্রশ্নই তুলে দিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি সিবিআইকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ এও জানায়, ভুলে যাবেন না, অভিযুক্তদেরও মৌলিক অধিকার রয়েছে।বিনা বিচারে ওই ভাবে তাঁদের আটকে রাখা যায় না। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা জেল খাটছেন। এর পরেই ১১ জন অভিযুক্তকে জামিন দেয় হাই কোর্ট। এই মামলায় অন্য আরও বেশ কয়েক জন অভিযুক্তকে এ মাসের শুরুতে জামিন দিয়েছিল উচ্চ আদালত। যাঁরা জামিন পেলেন তাঁরা হলেন, ভোলানাথ মাহাত, রাম মুদি, অমিয় মাহাত, মহন্ত মাহাত, সুনীল মাহাত, মনোজ মাহাত, লক্ষ্মীকান্ত রায়, জয়দেব মাহাত, মানিক মাহাত, জলধর মাহাত ও খগেন মাহাত।
প্রসঙ্গত, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটে ২০১০ সালের ২৮ মে। ওই ঘটনায় দেড়শো জনের বেশি যাত্রী প্রাণ হারান। যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ দেহ শনাক্ত করে পরিবারকে দেওয়া হলেও ২১ জনকে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি৷ নিখোঁজ হিসেবেই তাঁদের নাম এখনও লাল ফিতের ফাঁসেই আটকে রয়েছে। এদিকে অভিযোগ, তাঁদের পরিবার পায়নি সরকারি সুবিধাও৷ আইনি গেরোয় আটকে রয়েছে ক্ষতিপূরণের কাগজপত্র। ক্ষতিপূরণের দাবিতে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা।
যেদিন সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে, সেদিন দুপুরেই কলকাতা প্রেস ক্লাবে তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু বুদ্ধিজীবী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ব্রাত্য বসু, শুভাপ্রসন্ন, সুবোধ সরকার, যোগেন চৌধুরীর মতো ব্যক্তিরা। সেই সাংবাদিক বৈঠকে তাঁরা অভিযোগ করেন, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতা ঘটিয়েছে সিপিএম। তখনও জঙ্গলমহলে মাওবাদী তাণ্ডব অব্যাহত ছিল। পরে সিবিআই ওই ঘটনার তদন্তের ভার পায়। সিবিআই তদন্ত জানা যায়, এই ঘটনার সঙ্গে সিপিএমের কোনও যোগই ছিল না। পরের বছরই বিধানসভা ভোটে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল।