নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: ভোটার কার্ডে বয়স ১০৪ বছর। পরিবার সূত্রে দাবি, বয়স ১১২ বছর। সরকারি বয়সকেই ধরলে তিনিইz পঞ্চায়েত ভোটে জেলার মধ্যে প্রবীণতম ভোটার বলেই জানা গিয়েছে। তিনি কাঁকসা ব্লকের সরস্বতীগঞ্জের বাসিন্দা হারাধন সাহা।
কাঁকসা ব্লকের প্রবীণতম এই ভোটারটির শরীর বেশ খারাপ। ঠান্ডাগরমে বেশ কাহিল। কানেও খুব একটা শুনতে পান না। শরীরটা ইদানীং ভালো যাচ্ছে না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে জানালেন ভোট দিতে যাবেন ভোটকেন্দ্রে। তারপরেই বলে চললেন তাঁর ভোট দেওয়ার কাহিনি। বললেন, ‘ব্রিটিশ আমলে ঠিকাদারি করেছেন, নিজের জমি নিজে হাল দিয়েছেন। সেই আমল থেকেই ভোটার আমি। গোরুর গাড়ি করে ভোট দিতে যেতাম লাউদোহার কালিনগর গ্রামে। এরপর সাইকেলে করে মলানদিঘিতে ভোট দিতে যেতাম। আর বাড়ির মেয়েরা যেত গোরুর গাড়ি করে। তারপরে ঘর থেকে ৫০০ মিটারের কিছুটা বেশি দূরত্বের প্রাথমিক ßুñলে ভোট দিতে যাই। এবারেও যাব এবং ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেব। ভোটের লাইনে ভোট দেওয়ার এক আলাদা মজা আছে, তাই সে ভাবেই ভোট দেব।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে তিনি ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। ২০২১ সালে নির্বাচন কমিশন শতায়ুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করায় বাড়িতেই ভোট দিয়েছেন। ভোট কাকে দেবেন প্রশ্নের উত্তরে হারাধনবাবুর বলে ওঠেন, ‘আমি বরাবরের গান্ধি ভক্ত এবং ডানপন্থী। আমার আয়ের টাকায় জমি কিনেছিলাম। সিপিএম সেই জমি খাস করে নিয়েছিল আমি তা কখনও ভুলিনি। আমার ছেলে শিবু ওরফে প্রয়াত শিবনারায়ণ সাহা কংগ্রেস করত বলে সিপিএম সেসময় অনেক অত্যাচার করেছে। এখন আমি ঘরের মেয়ে মমতাকেই ভোট দেব।’
প্রসঙ্গত, কাঁকসা ব্লক তথা সাবেক বর্ধমান জেলার রাজনীতিতে শিবনারায়ণ সাহা বেশ পরিচিত নাম। লক্ষী সাহা সিপিএম বিধায়ক ছিলেন। লক্ষী সাহা কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরে অভিমান করে শিবনারায়ণ সাহা বিজেপিতে যোগ দেন। শিবনারায়ণ সাহাকে প্রার্থী করে বিজেপি দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে। শুধু তাই নয়, সারা ভারতের একমাত্র প্রধান মুখ এলকে আডবানী শিবনারায়ণ সাহার হয়ে দুর্গাপুরের চিত্রালয় মেলা ময়দানে প্রচারে এসেছিলেন সেই সময়।
হারাধন সাহা এবার হেঁটে হেঁটেই ২১৭ নম্বর বুথে ভোট দিতে যাবেন ও লাইনে দাঁড়িয়েই ভোট দেবেন। কাঁকসা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুথে প্রবীণ ভোটারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে আর প্রবীণতম ভোটারের জন্য তো থাকবেই ।