কলকাতায় আসার জন্য আজকাল শুধু বাস বা ট্রেন নয় একইসঙ্গে শমান গুরুত্ব পাচ্ছে নৌ পথও। সমীক্ষা জানাচ্ছে, প্রতিনিয়ত কয়েক লক্ষ মানুষ কর্মস্থলে বা বিভিন্ন কাজে যাওয়ার জন্য ফেরিকেই মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। আর এই নৌ-পথকে আরও উন্নত করে তুলতে নয়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সূত্রে খবর, নিত্যযাত্রীদের সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে একাধিক ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা কার্যকর হবে রাজ্যের বিভিন্ন নৌপথে। শুধুমাত্র যাত্রী পরিবহণ নয়, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। এক হাজার কোটির বেশি টাকা খরচ করে ফেরি পরিষেবার আমূল পরিবর্তন ঘটানো হবে। এর জন্য একটি প্রকল্পও নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। যেখানে মোট খরচ হবে ১০২১ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারের তরফে ৩০৬ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে আর বিশ্ব ব্যাঙ্ক দিয়েছে ৭১৫ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে এ বিষয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্ককে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে অনুমোদন পায় রাজ্য। ৫ বছরের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্রে এ খবরও মিলছে, প্রাথমিকভাবে ত্রিবেণী থেকে গেঁওখালি ও কল্যাণী থেকে নূরপুর- গঙ্গার বুকে এই দুই নৌপথকে রাজ্য সরকার এই বিশেষ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করেছে। রাজ্যের তরফে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন অন্তত ৫ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন ও ৬০০ টন পণ্য ফেরি হয় ওই দুই নদীপথে। তাই ওই ফেরিঘাট থেকে নৌযান সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন ঘটিয়ে পরিকাঠামো আরও শক্তিশালী করে তোলা দরকার বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার।
এর পাশাপাশি আগামীদিনে গ্রিন ভেসেল চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ওই ভেসেলগুলি কোনও বিদ্যুৎ ছাড়াই চলবে। নতুন ১৫টি জেটি তৈরি করা হবে এই প্রকল্পে। যে সব জেটি থেকে বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন, সেখানে তৈরি হচ্ছে টার্মিনাল। হাওড়া, পানিহাটি, চুঁচুড়া, নৈহাটি, মেটিয়াবুরুজে টার্মিনাল তৈরি হওয়ার কথা। এছাড়া নিবেদিতা সেতু থেকে শুরু হবে কার্গো রুট, যেখানে পণ্যবাহী ট্রাকও যাতায়াত করতে পারবে।
একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, সুরক্ষার জন্য ঘাটগুলিতে লাগানো হবে রেলিং, নৌকা বা ভেসেলে ওঠার আগে যে ব়্যাম্পগুলিতে দাঁড়াতে হয়, সেগুলি যাতে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীরা সহজে ব্যবহার করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। যাত্রীদের অপেক্ষা করার জায়গা থেকে বাথরুম, বদলে যাবে সবই। স্মার্ট টিকেট টাকার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে এই প্রকল্পে।