দুর্গাপুর: দুর্গাপুর পুরসভার জল দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী কালো রুইদাস, যিনি সাধারণের কাছ থেকে জলের কর বাবদ নগদ ও ডিজিট্যাল মাধ্যমে টাকা সংগ্রহের কাজ করতেন। বিগত ৫-৬ বছর যাবত তিনি এই কাজ করছিলেন। অভিযোগ, কালো রুইদাস বিগত ৫-৬ বছর যাবত সংগ্রহ করা সম্পূর্ণ অর্থ জল দপ্তরে জমা করেননি। এমনই অভিযোগ জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার, দুর্গাপুরের বর্তমান মেয়র, অডিট জেনারেল-কলকাতা, চেয়ারম্যান অরবন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মিউনিসিপাল এপিয়ার্স-কলকাতা, এডিজি অ্যান্ড আইজিপি অ্যান্টি কর্পোরেশন ব্যুরোকে জানানো হয় চলতি বছরের ১১ এপ্রিল অল ইন্ডিয়া অ্যান্টি কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে। ‘অল ইন্ডিয়া অ্যান্টি কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনের’ পক্ষে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানান সুব্রত মল্লিক। সুব্রত মল্লিক জানান, ‘বিগত ৫-৬ বছর ধরে কালো রুইদাস নামের ডিএমসি-র এক সরকারি কর্মী, যিনি জলের কর বাবদ সাধারণের কাছ থেকে টাকা আদায় করে সম্পূর্ণ টাকা ডিএমসি-র ক্যাশ ডিপার্টমেন্টে জমা দিতেন না। সুব্রতবাবু বলেন, কালো রুইদাস প্রায় ২৭ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি সরকারি অর্থ জমা দেননি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। তিনি আরও বলেন, কালো রুইদাসের সঙ্গে আরও এক ডিএমসি-র ঠিকাকর্মী মৌ কোড়া যুক্ত ছিলেন। সুব্রত মল্লিক বলেন, অভিযোগ জানানোর পরই অডিট বিভাগ জল দপ্তরের অডিট শুরু করে। তারপরই ধরা পরে জল কর বাবদ সংগ্রহ করা নগদ এবং জমা দেওয়া নগদ রাশির মধ্যে বিস্তর ফারাকের বিষয়টা। তড়িঘড়ি কালো রুইদাসকে সরিয়ে দেওয়া হয় অন্য বিভাগে। এরপরই ডিএমসি সূত্র মারফত জানতে পারি, কালো রুইদাসকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং ঠিকাকর্মী মৌ কোড়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান সুব্রত মল্লিক’। এই বিষয়ে বিরোধী কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ২৭ লক্ষ টাকা যে চুরি করেছে তাকে সাসপেন্ড করা হল, আর যিনি এই চুরির কাজে কালো রুইদাসকে সহযোগিতা করেছেন তাকে বরখাস্ত করা হল। তিনি একজন ঠিকাকর্মী। চন্দ্রশেখর বলেন, ঠিকাকর্মী বলে তাকে বরখাস্ত করল বর্তমান পুরবোর্ড আর যিনি স্থায়ী সরকারি কর্মী তাকে সাসপেন্ড করে তাঁর মনোবল বাড়ানোর কাজ করল পুরবোর্ড। এই সিদ্ধান্তের পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, কালো রুইদাস এই টাকা তছরূপ কাণ্ডে একা নন, আরও বড় মাথারা এই কাজে যুক্ত রয়েছেন। চন্দ্রশেখর আরও বলেন, সঠিক অডিট হলে বড়-বড় রাঘব বোয়ালদের নাম প্রকাশ পাবে। অবিলম্বে তাদের চহ্নিত করুক বর্তমান পুরবোর্ড এবং তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক’। এই বিষয়ে সুব্রত মল্লিক আরও জানান, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে পুরসভার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। তবে, শুধু জল দপ্তর নয়, অন্যান্য বিভিন্ন দপ্তরে চলছে কারচুপি। সুব্রত মল্লিক বলেন, বিশেষ করে ডিএমসি-র পার্চেস (ক্রয়) বিভাগে বিস্তর দুর্নীতি চলছে। অডিট সঠিক ভাবে হলে সমস্তটাই বেড়িয়ে আসবে জনসমক্ষে বলে দাবি করেন তিনি।