নিজস্ব প্রতিবেদন, অণ্ডাল: দুর্গাপূজায় যখন আনন্দে মেতেছে বাঙালি, ঠিক সেই সময় দুঃখের খবর এল কয়লা খনি অঞ্চল থেকে। প্রত্যেক দিনের মতোই বৃহস্পতিবার সকালে নিজ নিজ কাজে এসেছিলেন ইসিএল কর্মী মাইনিং সর্দার সারদা চরণ মহান্তি, আশু মাঝি ও মনোজ ভুঁইয়া। হঠাৎ কর্মরত অবস্থায় কয়লার চাঙর পড়ে গুরুতর ভাবে আহত হন তিনজনেই। শত্রু মারফত জানা যায়, হাসপাতালে নিয়ে যেতেই মাইনিং সর্দার সারদা চরণ মহান্তিকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। দু’জন ইসিএল কর্মী এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বলে খবর। ঘটনার খবর জানাজানি হতেই খনি কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অণ্ডাল থানার পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
আজকের এই দুঃখজনক ঘটনার সম্পূর্ণ দায় ইসিএল কর্তৃপক্ষের বলে দাবি করেন শ্রমিক সংগঠন সিএমসি এইচএমএসের জেনারেল সেক্রেটারি শিবকান্ত পান্ডে। তিনি জানান, বর্তমানে ইসিএল আধিকারিকরা কয়লা খনির নিরাপত্তার দিকে নজর দেন না তাঁরা শুধু ব্যস্ত বেসরকারিকরণ করে খোলা মুখ খনি তৈরি করে কয়লা উৎপাদনে। জীবন হাতে নিয়েই কোলিয়ারিগুলিতে কাজ করতে বাধ্য খনি কর্মীরা। খনি গহ´রে নিরাপত্তা একেবারে নেই বললেই চলে বলে দাবি করেন শিবকান্তবাবু। তিনি জানান, আজকের এই দুর্ঘটনার দায় সম্পূর্ণ ইসিএলের। এর জবাব দিতে হবে ইসিএলের সংশ্লিষ্ট কোলিয়ারির আধিকারিক থেকে ইসিএলের সর্বোচ্চ সিএমডিকেও।
একই দাবি করেন শ্রমিক সংগঠন সিটুর নেতা মানবেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এআইটিইউসি নেতা অখিলেশ কুমার সিং। তাঁরা জানান, যে ভাবে খনির মধ্যে দুর্ঘটনাগ্রস্ত শ্রমিকদের খনির লিস্ট থেকে তোলা হল তা অত্যন্ত দুঃখজনক নেই কোনও স্ট্রেচার, নেই কোনও চিকিৎসকের ব্যবস্থা। ভাঙা দুলিতে করে তুলে বস্তায় ধরে তাঁদেরকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপানো হল। যা এরকম একটা নবরত্ন কোম্পানির কাছে লজ্জার। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তার সম্পূর্ণ তদন্তের দাবি করেন শ্রমিক সংগঠনের লোকেরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অণ্ডাল থানার পুলিশ। সংশ্লিষ্ট কোলিয়ারির আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন খনির কর্মীরা।
দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই কোলিয়ারি থেকে উধাও হয়েছেন সংশ্লিষ্ট কোলিয়ারির আধিকারিকরা। তাই এই দুর্ঘটনার বিষয়ে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।